
ছবি: সংগৃহীত
একসময়ের কেমিস্ট্রি প্রফেসর হিসেবে পরিচিত মমতা পাঠক এবার আলোচনায় এসেছেন ভিন্ন কারণে।নিজের স্বামীকে হত্যার অভিযোগে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ভারতের মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ৯৭ পৃষ্ঠার রায়ে ২০২২ সালের রায় পুনর্বহাল রেখে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে এই মামলাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন মমতা নিজেই। তিনি কোনো আইনজীবীর সাহায্য না নিয়ে নিজেই উচ্চ আদালতে নিজের পক্ষে লড়েছেন।
মমতা পাঠকের স্বামী ডা. নীরজ পাঠক ছিলেন একজন প্রধান মেডিক্যাল অফিসার। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, প্রথমে মমতা স্বামীকে অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করেন, তারপর তাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করেন। সবকিছুই ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং নির্মম।
জেলার আদালত মেডিকেল রিপোর্ট এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তবে একটি মানবিক কারণে তাকে কিছু সময়ের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছিল, তার মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী সন্তানের দেখভালের জন্য।
এই সময়েই তিনি হাইকোর্টে জেলা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এবং নিজেই নিজের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "থার্মাল বার্ন ও ইলেকট্রিক বার্ন দেখতে প্রায় একইরকম, কেবল রাসায়নিক বিশ্লেষণেই পার্থক্য ধরা সম্ভব", এই বক্তব্য আদালতে বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কি কেমিস্ট্রি প্রফেসর?” তিনি উত্তর দেন, “হ্যাঁ।”
তিনি বলেন, মৃতদেহের মুখ বন্ধ ছিল, কেমিক্যাল টেস্ট হয়নি, ইলেকট্রন মাইক্রোস্কপি করা হয়নি, এমনকি বাড়িও ছিল ইনসুলেটেড। এসবের উপর ভিত্তি করে তিনি পোস্টমর্টেম রিপোর্টকে অস্বীকার করেন। কিন্তু আদালত তাঁর যুক্তিগুলো প্রাসঙ্গিক নয় বলে উড়িয়ে দেয়।
এই বিচারের সময় তার ঠাণ্ডা মাথায় যুক্তি দেওয়া, ভেঙে না পড়া এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয় ব্যাখ্যা করার দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিও ক্লিপ এবং তার বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেন।
তবে এত আলোচনার পরও হাইকোর্ট তার সাজা বহাল রেখে বলে, এই অপরাধ গুরুতর এবং প্রমাণিতভাবে ইচ্ছাকৃত খুন। তাই তাকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
মুমু ২