
হাল্কা বৃষ্টিতে দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ ইউনিয়নের হরগজ নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে যায়। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক-শিক্ষিকারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে বিদ্যালয় মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রায় ৪৬ হাজার টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। মাঠে মাত্র চার ট্রাক মাটি ফেলে কাজ শেষ দেখানো হয়, ড্রেন নির্মাণ হয়নি বললেই চলে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই বিদ্যালয় চত্বর হাঁটু সমান পানিতে পরিণত হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সীমা রানী সরকার বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ১৮১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বৃষ্টি হলে মাঠে পানি জমে থাকে। পানি নিষ্কাশনের জন্য কিছু পাইপ বসানো এবং ৪ ট্রাক মাটি ফেলার কথা জানি, তবে প্রকল্পের ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা শামিম মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৭ বছরে বিদ্যালয়ে কোনো বড় উন্নয়ন হয়নি। এবার যে ৪৬ হাজার টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেটিও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাজাহান মোল্লা অনিয়মের মাধ্যমে গড়িমসি করে শেষ করেছেন। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র নিরবের বাবা রাসেল মিয়া বলেন, আমার সন্তান স্কুলে গেলেও মন শান্ত থাকে না। সব সময় ভয় থাকে কখন যেন কাদা পিচ্ছিল পানিতে পড়ে গিয়ে বাচ্চার হাত-পা ভেঙে যায়।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সোহানা আক্তারের মা শেখা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, টাকা এলেও সঠিকভাবে কাজ হয়নি। তিনি আরও বলেন, এমন অবস্থায় শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় স্কুলেও আসতে চায় না। অভিভাবক রুবেল মিয়া বলেন, শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে জমে থাকা পানিতে পড়ে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে কাবিখা কর্মসূচির আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেড় টন চাল বরাদ্দ দিয়ে একটি ড্রেন নির্মাণের কথা ছিল। আমার জানা মতে, কাজটি যথাযথভাবে হয়নি, যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে।
এই বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রকল্প কমিটির সদস্য সচিব ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শাজাহান মোল্লার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে থাকার বিষয় এবং কাবিখা প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে এমন বিষয়ে আমার দপ্তরে কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্যানেল হু