
ফুলবাড়িয়া ও ত্রিশালের বৈলার সংযোগ সড়কের বহু স্থানে এরকম গর্ত হয়ে আছে
সংস্কার, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ময়মনসিংহে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর অধিকাংশ সড়কই খানাখন্দে বেহাল হয়ে পড়েছে। ফলে ভেঙে পড়েছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক। প্রতিদিন এসব ভাঙাচোরা সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন হাজারো মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন জরুরি চিকিৎসাসেবা, বিশেষ করে প্রসবজনিত রোগীরা।
বাড়তি ব্যয় গুনতে হচ্ছে মালামাল পরিবহনেও। অথচ সড়কের এই করুণ দশা দেখার যেন কেউ নেই। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এলজিইডি ও স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই এই দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এলজিইডি ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী সালমান রহমান রাসেল বলেন, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় সময়মতো সড়কগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। ময়মনসিংহ জেলার সবচেয়ে বেহাল সড়কের একটি হলো ফুলবাড়িয়া ও ত্রিশালের বৈলর মোড় সংযোগ সড়ক। প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের অন্তত ৮ কিলোমিটার অংশ গত পাঁচ বছর ধরে চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। হাসালিয়া ব্রিজ থেকে মোসলেমের মোড়, গাংবড়াইল, রাধাকানাই বাজার, আন্দারিয়াপাড়া মোড়, ছনকান্দা ও নাড়াবিল বন্দ পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে কার্পেটিং ও ইট-সুরকি উঠে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষায় এসব গর্ত পানিতে ভরে কাদায় একাকার হয়ে যায়। অচেনা চালকদের জন্য এসব গর্ত যেন মরণফাঁদ। গর্তে পড়ে যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্যাটারি ও ইঞ্জিনচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও রিকশাভ্যান চালাতে গিয়ে সাইলেন্সার পাইপ ও মোটরে পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে। ফলে অনেকে এসব পথে যানবাহন চালাতে চান না। যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। ফুলবাড়িয়ার রাধাকানাই গ্রামের ইজিবাইক চালক রইছ মিয়া বলেন, গর্ত পার হওয়ার সময় ইজিবাইকের ব্যাটারি ও সাইলেন্সারে পানি ঢুকে যানবাহন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রাধাকানাই বাজার থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরের প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক। বৃষ্টিতে জমে থাকা পানির নিচে লুকিয়ে থাকা বড় বড় গর্তগুলো যানবাহন ও পথচারীদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
আন্দারিয়াপাড়া মোড়ের গর্তে ভাঙা ইট ফেলে কিছুটা চলাচলের উপযোগী করেছেন স্থানীয়রা। দিনে চোখের আন্দাজে চলা গেলেও রাতে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়তে হয়। রাধাকানাই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, প্রতিদিন হাজারো মানুষ ফুলবাড়িয়া, ত্রিশাল ও ময়মনসিংহ শহরে যাতায়াত করে। অথচ গত পাঁচ বছরে সড়ক মেরামতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফুলবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের কথা বললেও ফুলবাড়িয়ায় স্থানীয় নেতাদের ব্যক্তিগত উন্নয়ন ছাড়া কোনো অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ কামরুল হাসান মিলন অভিযোগ করেন, এলজিইডি ও স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা, আন্তরিকতার অভাব এবং গাফিলতির কারণেই জনগণকে এভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্যানেল