ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

পিত্তথলির ক্যান্সারের ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ যা সহজেই উপেক্ষিত হয়

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ২ আগস্ট ২০২৫

পিত্তথলির ক্যান্সারের ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ যা সহজেই উপেক্ষিত হয়

পিত্তথলির ক্যান্সার একটি বিরল কিন্তু আক্রমণাত্মক ধরনের ক্যান্সার, যা যকৃতের নিচে থাকা ছোট অঙ্গ পিত্তথলি থেকে শুরু হয়। এই অঙ্গটি পিত্তরস সংরক্ষণ করে, যা হজমে সাহায্য করে। দুঃখজনকভাবে, এই ক্যান্সার সাধারণত দেরিতে ধরা পড়ে, যার ফলে চিকিৎসা কঠিন হয়ে পড়ে এবং রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।

প্রাথমিক লক্ষণগুলো অনেক সময় অন্যান্য সাধারণ অসুস্থতার মতো মনে হয়, তাই সেগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে অনেকেই এড়িয়ে যান। অথচ, যদি প্রাথমিক পর্যায়েই এই লক্ষণগুলোকে চিহ্নিত করা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নিয়ে জীবন বাঁচানো সম্ভব হতে পারে।

চলুন জেনে নিই পিত্তথলির ক্যান্সারের এমন ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ যা সহজেই উপেক্ষিত হয়:

১. ডান পাশে পেটের উপরিভাগে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি

পিত্তথলির ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ প্রাথমিক লক্ষণ হল ডান পাঁজরের নিচে হালকা ব্যথা বা ভারী লাগার অনুভূতি। অনেকে এটিকে তীব্র ব্যথা না ভেবে "টান পড়ার মতো অনুভূতি" হিসেবে বর্ণনা করেন। এই ব্যথা মাঝেমধ্যে আসে এবং যায়, তাই একে অনেক সময় গ্যাস, অজীর্ণতা বা গলস্টোন ভেবে উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু যকৃত ও পিত্তথলির সংলগ্ন এই অঞ্চলের যেকোনো ব্যথাকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

২. বমি বমি ভাব বা বমি

প্রথম দিকে অনেক রোগী খাওয়ার পর অল্প খাওয়া সত্ত্বেও বমি বমি ভাব অনুভব করেন। যেহেতু বমি বমি ভাব বিভিন্ন হজম সমস্যায় দেখা যায়, তাই এটি সাধারণত গুরুত্ব পায় না। তবে যদি এই উপসর্গ কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় এবং এর কোনো সুস্পষ্ট কারণ না থাকে (যেমন গর্ভাবস্থা বা পেটের অসুখ), তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৩. অজানা কারণে ওজন কমে যাওয়া বা ক্ষুধামান্দ্য

কোনো রকম চেষ্টা ছাড়াই হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা ক্ষুধা একেবারে কমে যাওয়া পিত্তথলির ক্যান্সারের একটি গুরুতর সংকেত হতে পারে। ক্যান্সার শরীরের শক্তি ব্যবহার ও পুষ্টি শোষণের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। তাই যদি আপনি দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধামান্দ্য বা অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস লক্ষ্য করেন, চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।

৪. প্রাথমিক জন্ডিস

পিত্তনালীর পথে বাধার কারণে পিত্তরস রক্তপ্রবাহে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে ত্বক ও চোখের সাদা অংশে হালকা হলদেটে ভাব দেখা দেয়। গা চুলকানি, গাঢ় রঙের প্রস্রাব এবং হালকা বর্ণের মল—এই উপসর্গগুলোও দেখা দিতে পারে। গা গা হলুদ ভাব যদি প্রথমে খুব হালকাও হয়, তবুও তা অবহেলা না করে পরীক্ষা করানো উচিত। যদি এটি ক্যান্সার না-ও হয়, তবু দ্রুত চিকিৎসা নিলে জন্ডিস সহজেই নিরাময়যোগ্য।

৫. দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ক্লান্তি

দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যাখ্যাতীত ক্লান্তি ও দুর্বলতা কেবল সাধারণ দুশ্চিন্তা বা ঘুমের ঘাটতির কারণে নয়, বরং এটি পিত্তথলির ক্যান্সারের প্রাথমিক সংকেতও হতে পারে। যদি ক্লান্তি প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেয় এবং ধীরে ধীরে বেড়ে যায়, তবে একে অবহেলা করা উচিত নয়। বিশেষ করে যদি এই ক্লান্তির সঙ্গে পেটব্যথা বা বমি বমি ভাবও থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

যেহেতু পিত্তথলির ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা কঠিন, তাই এই উপসর্গগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব লক্ষণ যদি একাধিক দিন বা সপ্তাহ ধরে বজায় থাকে, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আগেভাগে ধরা পড়লে চিকিৎসা সহজ হয় এবং জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনাও বাড়ে।

সূত্র: https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/health-fitness/health-news/5-early-symptoms-of-gallbladder-cancer-that-are-easy-to-ignore/photostory/123055308.cms

সজিব

×