ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

মানসিক চাপ ও বিক্ষিপ্ততা কমাতে ৮টি অভ্যাস

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ২ আগস্ট ২০২৫

মানসিক চাপ ও বিক্ষিপ্ততা কমাতে ৮টি অভ্যাস


আজকের ব্যস্ত ও গতিশীল জীবনে আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিনিয়ত চাপের মধ্যে থাকে—টুডু লিস্ট, নোটিফিকেশন, দুশ্চিন্তা আর চারপাশের শব্দে ভরে যায় মাথা।


এই সময়ে আমরা এমন এক সংস্কৃতিতে বাস করি, যেখানে অতিরিক্ত ব্যস্ততা আর সার্বক্ষণিক অনলাইনে থাকা যেন ‘সফলতার’ মানদণ্ড হয়ে উঠেছে। ফলে আমরা প্রায়শই মানসিকভাবে ক্লান্ত, বিক্ষিপ্ত ও অপ্রস্তুত থাকি—যা সত্যিকার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর মনোযোগ দেওয়া কঠিন করে তোলে।


এই পরিস্থিতিতে মিনিমালিজম (সাধাসিধে ও সংযত জীবনযাপন) হতে পারে এক কার্যকর সমাধান।
শুধু বাড়িঘর পরিষ্কার করাই নয়, মন ও জীবনকেও গোছাতে মিনিমালিজম আপনাকে সহায়তা করতে পারে। নিচে এমন কিছু সহজ অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যা আপনি আজ থেকেই প্রয়োগ করতে পারেন মনের জঞ্জাল কমাতে—


১. শারীরিক পরিবেশ গুছিয়ে নিন
আপনার আশপাশের অব্যবস্থা, যেমন টেবিল ভরা কাগজপত্র বা এলোমেলো ঘর, মনের ওপর প্রভাব ফেলে। চোখের সামনে যত কম বিশৃঙ্খলা, মন ততটাই প্রশান্ত থাকে।
ছোট করে শুরু করুন—টেবিল পরিষ্কার, রান্নাঘরের কাউন্টার গোছানো কিংবা বাসার এমন কোনো দৃশ্যমান এলাকা পরিপাটি করে তুলুন।

২. ডিজিটাল বিভ্রান্তি সীমিত করুন
ফোনে নোটিফিকেশন, মেসেজ, অ্যাপ–এসব নিরবচ্ছিন্নভাবে মনোযোগ চুরি করে নেয়।
সমাধান:

অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ করুন
ইমেইল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখার সময় নির্ধারণ করুন
রাতের ঘুমের আগে অন্তত ১ ঘণ্টা ফোন দূরে রাখুন
এতে করে শুধু মন শান্ত হবে না, ঘুমও ভালো হবে।

৩. একসঙ্গে অনেক কিছু না করে একটায় মন দিন (Monotasking)
একাধিক কাজ একসঙ্গে করার চেষ্টা আমাদের ক্লান্ত ও অকার্যকর করে তোলে।
বরং একসঙ্গে একটি কাজ করুন, পুরো মনোযোগ দিয়ে। বাসন ধোয়া হোক বা বই পড়া—সেই কাজেই থাকুন সম্পূর্ণভাবে।

৪. সময়ের ফাঁকে ‘ফাঁকা জায়গা’ রাখুন
দিনের প্রতিটি ঘণ্টা পরিকল্পনায় ভরে রাখবেন না। কিছুটা সময় ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁকা রাখুন—চিন্তা করতে, বিশ্রাম নিতে বা সৃজনশীল হওয়ার সুযোগ পেতে।

এমন বিশ্রামের সময়েই অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বচ্ছতা ও প্রেরণা পাওয়া যায়।

৫. দিন শুরু করুন সচেতনতা দিয়ে
সকালের রুটিন যদি শান্তিপূর্ণ হয়, সারাদিনই নিয়ন্ত্রিত থাকে।
সকালে কয়েক মিনিট মেডিটেশন, হালকা স্ট্রেচিং, নীরব চা বা কফি, অথবা জার্নাল লেখার অভ্যাস আপনাকে মনের দিক থেকে প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।

৬. প্রতিদিন কৃতজ্ঞতা চর্চা করুন
প্রতিদিন ৩টি বিষয় লিখুন বা ভাবুন, যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ।
এতে মন ইতিবাচক হয়ে উঠবে এবং নেতিবাচক ভাবনা কমে যাবে। এই অভ্যাস চাইলে সকালে দাঁত ব্রাশ করার সময়, কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বা রাতে ঘুমানোর আগে করলেও হবে।

৭. চিন্তার জঞ্জাল ছাড়ুন
অনেক সময়ই আমাদের মাথা ভর্তি থাকে দুশ্চিন্তা, অনুশোচনা কিংবা ভবিষ্যতের ভয় নিয়ে।
এই জিনিসগুলো থেকে মুক্তি পেতে লিখুন, গভীরভাবে শ্বাস নিন বা ধ্যান করুন।
নিজেকে প্রশ্ন করুন: “এই ভাবনাটা কি আমার কাজে আসছে?”
যদি না আসে, তাকে মনের পাশেই সরিয়ে রাখুন।

৮. সবচেয়ে জরুরি কাজে মনোযোগ দিন
অন্তহীন টুডু লিস্টে ডুবে না গিয়ে প্রতিদিন ২–৩টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ বেছে নিন।
১-৩-৫ নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন—১টা বড়, ৩টা মাঝারি, ৫টা ছোট কাজ করুন দিনে।

এইভাবে লক্ষ্য স্থির রেখে কাজ করলে মানসিক চাপ কমবে ও দক্ষতা বাড়বে।


 

সানজানা

×