ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

দারিদ্র্য ঘোচাতে প্রয়োজন মানবতা

জলি রহমান

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ২ আগস্ট ২০২৫

দারিদ্র্য ঘোচাতে প্রয়োজন মানবতা

এদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ, অথচ এখনো কোটি মানুষের মুখে খাবার পৌঁছায় না। অর্থনীতির ভাষায় অসীম সম্পদের সুষম বন্টন বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। তীব্র আকার ধারণ করেছে সম্পদ বৈষম্য। আমাদের দেশে দারিদ্র্য একটি বাস্তবতা, যা শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং মানবিক সংকটেরও নাম। দারিদ্র্যের এই সংকট শুধু সংখ্যা দিয়ে বোঝা যায় না, এটি বোঝা যায় সেই শিশুদের চোখের দিকে তাকালে, যারা ক্ষুধার্ত পেটে স্কুলে যায় কিংবা সেই মায়ের কান্নায়, যিনি অসুস্থ সন্তানের চিকিসা করাতে অপারগ।

জাতীয় আন্তর্জাতিক নানা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আজও পেট ভরে দুবেলা খেতে পারে না। সরকারিভাবে দারিদ্র্য হ্রাসে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও এটি নিছক আর্থিক সহায়তা বা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে পুরোপুরি মোকাবিলা সম্ভব নয়। প্রয়োজন আরও গভীর মানবিক উদ্যোগ। সম্প্রতি বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরিদ্র মানুষ শুধু আয়হীন নয়, তারা বাসস্থান, নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসেবা, রান্নার জ্বালানি, শিক্ষাসহ অন্তত ১০ সূচকে বঞ্চনার শিকার। এমন ১০ সূচকের মধ্যে এবার নতুনভাবে যুক্ত হয়েছেইন্টারনেট অ্যাক্সেস

মানবতা হোক আমাদের প্রধান শক্তি। যে সমাজে সহানুভূতি সমবেদনা নেই, সেখানে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। ধনীরা যদি গরিবের কষ্টে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, যদি সমাজের প্রতিটি মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাহলেই আসবে পরিবর্তন।আমি ভালো থাকলেই সমাজ ভালোএই চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেআমি ভালো থাকি, যদি আমার পাশের মানুষটিও ভালো থাকেএই চেতনায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।

শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান এবং ন্যায্য সম্পদ বণ্টনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে দারিদ্র্য হ্রাস সম্ভব। কিন্তু এর সঙ্গে চাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। সমাজের প্রতিটি স্তরে যদি সহানুভূতির চর্চা বাড়ে, যদি আমরা দারিদ্র্যকে সমস্যা নয়, একটি দায়িত্ব হিসেবে দেখি, তবে একদিন এই দেশ হবে সত্যিকার অর্থে মানবিক সমৃদ্ধশালী। আর মানবতা জাগাতে হলে আমাদের প্রত্যেককেই হতে হবে পরিবর্তনের দূত।

×