
নদের ভাঙ্গনের কবলে পাকা সড়ক ও বসত বাড়ি
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদের গর্ভে ইউপি সদস্যের বাড়িসহ প্রায় তিন শতাধিক বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এতে সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙনকবলিত মানুষ। ইতোমধ্যে কয়েকশ’ একর বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমিও নদী গর্ভে চলে গেছে। এদিকে নতুন করে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের প্রায় শতাধিক পরিবার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যে কোনো সময় রাক্ষুসী আড়িয়াল খাঁ নিয়ে যেতে পারে প্রায় ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজর-ঘাট, বাড়িঘর ও ফসলি জমি। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এ চিত্র। অপরদিকে নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় এলাকাবাসী। সরেজমিন ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সাহেবরামপুর এলাকার নতুন আন্ডারচর লঞ্চঘাট ও পূর্ব সাহেবরামপুর গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। বছরের পর বছর আড়িয়াল খাঁর তান্ডবে বিলীন হয়ে গেছে হাজারো বাড়িঘর। এ বছর নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদের গর্ভে চলে গেছে পূর্ব সাহেবরামপুর গ্রামের আক্কাস আকন, মোয়াজ্জেম ফকির, শিরাজ ফকির, মোশারপ সরদার, শাহাবুদ্দিন সরদার, মোখলেস সরদার, ফিরোজ ভূঁইয়া, আরিফ ভূঁইয়া, সঙ্কল সরদার, হিরন সরদার, মজিবর সরদার, আলাউদ্দিন সরদার, সাগর আলী, জসিম সরদার ও ইউপি সদস্য আদেল বেপারির বসতঘরসহ প্রায় শতাধিক বাড়িঘর। এ ছাড়া নতুন করে বর্তমানে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নতুন আন্ডারচর এলাকা, নতুন আন্ডারচর হাজী করিম খানের হাট, ৭৩ নং নতুন আন্ডার প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়, নতুন আন্ডারচর ইমদাদুলউলুম দাখিল মাদ্রাসা, আল মাহমুদ হাফিজিয়া মাদ্রাসা, করিম খানের হাট পোস্ট অফিস, গোলপাতা বাজার ও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সজীব বেপারি, সুলতান বেপারি, স্বপন বেপারি, কালাম বেপারি, মন্টু সরদার, বাদশা হাওলাদার, আলী সরদার, আলিম সরদার, শাহাদাত সরদার, সবুজ সরদার, শাহিন সরদার, লতিফ সরদার, আজিজুল ফকির ও সোহাগ ফকিরসহ শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলী জমি। এদিকে এ নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় এলাকাবাসি। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দা সাদিকুর রহমান সাদিকসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমাদের পুরো গ্রাম ও ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বাজার-ঘাট নদীর পেটে চলে যাবে। তাই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। আন্ডারচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদ বিগত দিনে হাজারো বসতবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। বর্তমানে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করা হলে বাকি ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনোমতে বাঁচানো সম্ভব হবে না। মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শুভ সরকার বলেন, কালকিনির সাহেবরামপুর আড়িয়াল খাঁ নদী এলাকায় আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙনকবলিত এলাকা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছি।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফ-উল-আরেফীন বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় আমি গিয়েছিলাম। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের খাঁন বলেন, নদী ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে।
প্যানেল