
ছবি: সংগৃহীত।
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্প্রতি আদালতে দেওয়া একটি জবানবন্দিতে দাবি করেছেন, গত জুলাইয়ে গণআন্দোলন দমন করতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়।
জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে নিয়মিত কোর কমিটির বৈঠকে বসে আন্দোলন দমন পরিকল্পনা করা হতো। সেখানে ব্লক রেড, কৌশলগত বিভ্রান্তি ও গণগ্রেফতারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো।
মামুন বলেন, “সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশ ও কিছু অতিউৎসাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্বিচার গুলিবর্ষণ, নির্যাতন এবং গ্রেফতার চালানো হয়।”
তিনি আরও দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের গ্রেফতার করে টেলিভিশনে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার সিদ্ধান্তও কোর কমিটি থেকেই আসে।
জবানবন্দিতে সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের নাম উঠে আসে, যাকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘জিন’ নামে ডাকতেন এবং যিনি দমন অভিযানে মূল নেতৃত্ব দেন।
সাবেক আইজিপির বক্তব্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী ও র্যাবের সহায়তায় আন্দোলনকারীদের গুলির লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। এমনকি তিনি দাবি করেন, সরকারপ্রধান নিজেই "মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ" দেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট ঢাকায় বিশাল জনসমাবেশ দেখে সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পড়ে এবং পুলিশ ব্যাকফুটে চলে যায়। তখনই তিনি সরকার পতনের আশঙ্কা বুঝতে পারেন এবং বিকেলে হেলিকপ্টারে করে সেনা ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের এই স্বীকারোক্তিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা “রাষ্ট্রযন্ত্রের এক অন্ধকার অধ্যায়ের দলিল” হিসেবে দেখছেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে—এই জবানবন্দির প্রেক্ষিতে রাষ্ট্র কি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে?
নুসরাত