
ছবি: সংগৃহীত
সিএনএন প্রতিবেদন থেকে অনুবাদ | এলিজাবেথ বুকওয়াল্ড, ডেভিড গোল্ডম্যান, আলেহান্দ্রা জারামিলো, অ্যালিসিয়া ওয়ালেস, আলাইনা ট্রিন ও এলিস হ্যামন্ড
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামীকাল একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য ‘পারস্পরিক শুল্ক’ বা reciprocal tariffs আরোপ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এদিকে ট্রাম্পের আরোপিত নানা শুল্ক আদেশের বৈধতা নিয়ে একটি আপিল আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মামলাটি দাবি করেছে, প্রেসিডেন্ট তাঁর আইনগত ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন।
সাম্প্রতিক অগ্রগতি:
* মেক্সিকোর সঙ্গে চুক্তি: আজ একটি চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে বিদ্যমান ২৫% শুল্ক আরও ৯০ দিনের জন্য বহাল রাখা হয়েছে। এর ফলে ট্রাম্প যে ৩০% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, তা আপাতত তিন মাসের জন্য স্থগিত হয়েছে।
* দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তি: গতকাল ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেছেন, যার আওতায় দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৫% শুল্ক আরোপ করা হবে।
* ব্রাজিলের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি: ট্রাম্প আরও একটি নির্বাহী আদেশে ব্রাজিলের ওপর অতিরিক্ত ৪০% শুল্ক আরোপ করেছেন, ফলে দেশটির জন্য মোট শুল্ক হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০%-এ।
* জাপানের সঙ্গে চুক্তি: মঙ্গলবার ট্রাম্প বহু প্রতীক্ষিত জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেন।
* চুক্তিবিহীন প্রধান অংশীদার: কানাডা ও তাইওয়ানসহ যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে এখনও কোনো চুক্তি হয়নি।
হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ অবস্থা:
* ট্রাম্পের মনোভাব: হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বেশ কিছু সফল চুক্তির ফলে ট্রাম্প আগামী শুক্রবারের শুল্ক ডেডলাইনের ব্যাপারে আরও দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করছেন।
* চীনের সঙ্গে আলোচনা: ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, তিনি এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার আজ ট্রাম্পকে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনার আপডেট দেবেন। আলোচনার উদ্দেশ্য আগস্ট ১২-এর আগের উচ্চ শুল্ক স্থগিতাদেশ আরও বাড়ানো।
* চুক্তিবিহীন দেশগুলো: হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, যারা চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি, তাদের কাছে খুব শিগগিরই একটি নোটিশ পাঠানো হবে। তবে ওইসব দেশের পণ্যে কী হারে শুল্ক আরোপ হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিচারিক বাধা ও অর্থনৈতিক প্রভাব:
* আদালতের উদ্বেগ: যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট কোর্ট অব আপিলসের বিচারকরা শুল্ক আরোপে ট্রাম্পের জরুরি ক্ষমতা ব্যবহারের বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই International Emergency Economic Powers Act ব্যবহার করে অধিকাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন।
* ভোক্তা ব্যয়: অন্যদিকে, মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পণ্যের দামে শুল্কজনিত বৃদ্ধির পরও মে থেকে জুন পর্যন্ত ভোক্তা ব্যয় ০.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি এখন এক জটিল মোড়ের দিকে যাচ্ছে। একটি বড় অংশীদার গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হলেও, আরও অনেক দেশের সঙ্গে চুক্তি অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে। আগামীকাল ট্রাম্পের সম্ভাব্য নির্বাহী আদেশ এবং শুক্রবারের ট্যারিফ ডেডলাইন বিশ্ববাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
আসিফ