ছবি: প্রতীকী
সম্পত্তি হস্তান্তরের দুটি প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে ‘উইল’ এবং ‘হেবা’। অনেকেই এই দুইটির মধ্যে পার্থক্য বুঝে উঠতে পারেন না কিংবা একে একই ধারণা বলে মনে করেন। এ বিষয়ে সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান।
তিনি বলেন, “উইল এবং হেবা—দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রক্রিয়া। উইল হচ্ছে এমন একটি দলিল, যেখানে আপনি মৃত্যুর পরে আপনার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে লিখে যেতে পারেন। এটি আপনার মৃত্যুর পর কার্যকর হয় এবং জীবিত অবস্থায় তার কোনো কার্যকারিতা থাকে না।”
উইলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি আইনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেটি হলো—ব্যক্তি তার মোট সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগের বেশি উইল করতে পারেন না। ব্যারিস্টার লিমা বলেন, “উইল আপনি চাইলে নিজের পরিবার ছাড়াও অন্য কাউকে, এমনকি কোনো প্রতিষ্ঠানকেও করতে পারেন, কিন্তু পরিমাণের দিক থেকে সীমাবদ্ধতা রয়ে যায়।”
অন্যদিকে, হেবা (অর্থাৎ গিফট) হচ্ছে জীবিত অবস্থায় সম্পত্তি হস্তান্তর করার একটি পদ্ধতি। এটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয় এবং চাইলে ব্যক্তি তার পুরো সম্পত্তি কাউকে হেবা করে দিতে পারেন। ব্যারিস্টার লিমার ভাষায়, “হেবা বলতে আমরা বুঝি গিফট। এটি সাধারণত রক্তসম্পর্কীয় সদস্যদের মধ্যেই বেশি প্রচলিত, তবে আইন অনুযায়ী আপনি যেকোনো কাউকে হেবা দিতে পারেন।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “অনেক বাবা-মা আছেন যাদের ছেলে নেই, শুধুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে তারা প্রায়ই যৌথভাবে তাদের সম্পত্তি মেয়েদের নামে হেবা করে দেন যাতে ভবিষ্যতে সম্পত্তি নিয়ে কোনো ধরনের বিরোধ না তৈরি হয়।”
আইন অনুযায়ী, হেবা দলিল সম্পন্ন হলে তা নোটারি পাবলিক বা রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, যাতে সেটি আদালতের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হয়।
ব্যারিস্টার লিমা আরও বলেন, “উইল কার্যকর হয় মৃত্যুর পরে, কিন্তু হেবা জীবিত থাকতেই সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়। তাই হেবা এবং উইলের মধ্যে এই মূল পার্থক্যটি বোঝা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে যারা ভবিষ্যতে তাদের সম্পত্তি কীভাবে বিতরণ করবেন তা নিয়ে চিন্তিত।”
সম্পত্তি হস্তান্তরের এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়ার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সূত্র: https://www.youtube.com/shorts/Ap_wslVL1VI
রাকিব
