ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

অধিকাংশ ইউরোপীয়দের পূর্বপুরুষই ছিল কৃষ্ণাঙ্গ!

প্রকাশিত: ০৭:২৯, ১৫ জুন ২০২৫

অধিকাংশ ইউরোপীয়দের পূর্বপুরুষই ছিল কৃষ্ণাঙ্গ!

ছ‌বি: সংগৃহীত

নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য— প্রাচীন ইউরোপীয়দের অধিকাংশই ছিল গাঢ় ত্বকের অধিকারী, অর্থাৎ তারা ছিল কৃষ্ণাঙ্গ। এই তথ্য পাওয়া গেছে ৪৫,০০০ বছরের প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণ করে।

গবেষকরা জানান, ইউরোপে আধুনিক মানুষের (হোমো স্যাপিয়েন্স) আগমন ঘটে প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ বছর আগে। তারা আফ্রিকান পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে গাঢ় ত্বক, চোখ ও চুলের রং উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল।

গবেষণায় ৩৪টি দেশ থেকে সংগৃহীত ৩৪৮টি প্রাচীন ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যেহেতু অনেক পুরনো নমুনা ক্ষয়প্রাপ্ত ছিল, তাই বিজ্ঞানীরা মডেল ব্যবহার করে তাদের গায়ের রঙ, চোখ ও চুলের রঙ অনুমান করেছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ইউরোপে হালকা ত্বকের বৈশিষ্ট্য প্রথম দেখা যায় প্রায় ১৪,০০০ বছর আগে। তবে তখনও তা বিরল ছিল। আস্তে আস্তে এই বৈশিষ্ট্য ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু তা ব্যাপকভাবে দেখা যায় মাত্র ৩,০০০ বছর আগে, ব্রোঞ্জ যুগের শেষ বা লৌহ যুগের শুরুতে।

হালকা ত্বক সম্ভবত উত্তরের শীতল আবহাওয়ায় ভিটামিন ডি তৈরি করতে সহায়ক হওয়ায় টিকে থাকতে সুবিধা পেয়েছে। তবে হালকা চোখের মতো বৈশিষ্ট্য হয়তো যৌন নির্বাচনের মাধ্যমে বা কেবল ঘটনাক্রমে ছড়িয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুইডেনের মতো উত্তর ইউরোপীয় অঞ্চলে হালকা ত্বকের জিন থাকলেও, তা লৌহ যুগ পর্যন্ত ব্যাপকভাবে ছড়ায়নি। গবেষণার মানচিত্রে দেখা গেছে, কপার যুগ বা তাম্র যুগের সময়েও ইউরোপের বহু অঞ্চলে গাঢ় ত্বকই সাধারণ ছিল।

চোখের রঙে পরিবর্তন শুরু হয় প্রায় ১৪,০০০ থেকে ৪,০০০ বছর আগে, বিশেষ করে উত্তর ও পশ্চিম ইউরোপে। তখনও অধিকাংশ মানুষের ত্বক ও চুল ছিল গাঢ়। একটি চমকপ্রদ উদাহরণ হলো— ১৭,০০০ বছর আগের এক শিশুর ডিএনএ, যার ছিল নীল চোখ, কিন্তু গাঢ় ত্বক ও চুল।

এই গবেষণা থেকে স্পষ্ট হয়, প্রাচীন ইউরোপীয়দের চেহারার বৈশিষ্ট্য আধুনিক সময়ের ইউরোপীয়দের তুলনায় ছিল একেবারেই আলাদা। এখনো এই পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট কারণ পুরোপুরি বোঝা যায়নি, তবে এটি মানব বিবর্তনের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি খুলে দিয়েছে।

সূত্র: biorxiv

এম.কে.

×