ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ভিন্নখবর

ভিন্নখবর বিভাগের সব খবর

জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন...

জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন...

জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন...। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পরও এদের টার্গেট মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অর্জন চিবিয়ে খেতে চায় এরা। বাঙালির যুদ্ধজয়ের গৌরব, এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ভুলিয়ে দিতে চায়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় অবদান অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখায়।  গত কদিনের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ভয়ংকর এই সব প্রবণতা দেখা গেছে। হ্যাঁ, সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই ছিল আন্দোলনটি। তবে বেহাত হতেও সময় লাগেনি। ক্রমে স্পষ্ট হয়েছে মানুষের ভিড়ে মুখোশে ঢাকা অনেক মুখ। মুখগুলো আন্দোলনকে দিনশেষে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালিয়েছে। তাদের তা-ব, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনাও মনে করিয়ে দিয়েছে রাজাকার আলবদর আলশামসদের কথা। একাত্তরে বর্বর পাকিস্তানিদের ঔরশজাত বাহিনীগুলো অনেকটা এভাবেই বাঙালির ওপর হামলে পড়েছিল।     ইতিহাসটি কারও অজানা নয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়েছিল রাজাকার আলবদর আলশামস বাহিনী। এ দেশের হয়েও  পাকিস্তান রক্ষার নামে বাঙালিদের নির্মম নিষ্ঠুরভাবে এরা হত্যা করেছে। নারীদের ধর্ষণ করেছে। অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল এদের বর্বরতা। নপুংশকের দল মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস গু-ামি করলেও, স্বাধীনতার পর গর্তে লুকিয়ে যায়। এদের খুঁজে বের করতে এমনকি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয়েছিল।

নারীর শরীরী অভিব্যক্তিকে উপজীব্য করে আঁকা ছবির প্রদর্শনী

নারীর শরীরী অভিব্যক্তিকে উপজীব্য করে আঁকা ছবির প্রদর্শনী

প্রতিটি ক্যানভাসে ধরা দিয়েছে গতিশীলতা। রঙের পরিমিত ব্যবহারের সঙ্গে গতিময় রেখার আঁচড়ে সজ্জিত হয়েছে চিত্রপটসমূহ। মূলত প্রকৃতির সমান্তরালে নারীর শরীরী অভিব্যক্তিকে উপজীব্য করে আঁকা হয়েছে ছবিগুলো। ড্যান্স বা নৃত্য সিরিজের ছবিগুলোতে সেই শরীরী ভঙ্গিমার অনন্য রূপায়ণ ঘটেছে। এই সিরিজের একটি বিশাল আকৃতির চিত্রপটে একসঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে সাত নারী। এই নারীকুলের সবাই ব্যস্ত দৈনন্দিন কাজে। শরীর অবনত করে কলসে জল ভরা কিংবা  কাঁধে বা মাথায় কলস নিয়ে হেঁটে যাওয়া ভঙ্গিমার মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নাচের ছন্দোময়তা। বাঁক খেলানো দেহের সচলতায় পরিপূর্ণতা দিয়েছে শিল্পরূপকে।  সব মিলিয়ে পুরো ফ্রেমজুড়ে যেন ভেসে বেড়ায় ঐকতানের সুর। এই সিরিজের আরেক ছবিতে সমুদ্রতটের বেলাভূমিতে বিচণাকারী নারীর বিচিত্র ভঙ্গিমার শরীরী প্রকাশ দেখা যায়।  সেখােেন ফর্মের  খেলায় মূর্ত গতিশীলতার অভিব্যক্তি।  ফিগার কম্পোজিশন সিরিজের ছবিতেও গতিশীলতায় মূর্ত হয়েছে নারীর শরীরী ভঙ্গিমা। দৌড় শিরোনামের ছবিতে ঘোড়ার ছুটে চলা পদযুগলের ক্ষিপ্রতার সঙ্গে হুবহু মিলে যায় এক দৌড়বিদের পদক্ষেপ। এভাবেই গ্রামীণ নারী থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী শিরোনামের ছবিগুলো হয়ে উঠেছে গতিময়তার প্রতীক। শিল্পরসিকের নয়নে মুগ্ধতা ছড়ানো ছবিগুলো এঁকেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রকর জাহাঙ্গীর হোসেন। সেসব চিত্রকর্ম নিয়ে রাজধানীর প্রগতি সরণির অবিন্তা গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী। শিল্পায়োজনটির শিরোনাম উইন্ডস অফ ফ্লেভার।  শুক্রবার ছুটির দিনে বিকেলে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়।এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুই প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম ও ফরিদা জামান। অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ও তার স্ত্রী এবং ঢাকায় নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস  সেসা। সভাপতিত্ব করেন অবিন্তা গ্যালারি অফ ফাইন আর্টসের চেয়ারপারসন নীলু রওশন মোরশেদ। অনুভূতি প্রকাশ করেন শিল্পী জাহাঙ্গীর হোসেন।  জাহাঙ্গীর হোসেনের শিল্প সৃজনের মূল ভাবনায় রয়েছে মানবজীবনের গতিময়তা, গতিশীলতা এবং প্রকৃতি ও আশপাশের জীবনধারা। এই চিত্রশিল্পী প্রাচ্যের জীবন এবং তার শিল্পিত দর্শনকে মেলে ধরেছেন পশ্চিমা সমকালীন ধারায় অংকিত শিল্পকর্মে। প্রতিটি চিত্রকর্ম সৃজনে তিনি ভিন্ন ধারা এবং আঙ্গিকের আশ্রয়ে বিষয়বস্তুকে উপস্থাপন করেছেন। সেখানে গতিশীল মানুষের  দেহ হয়ে উঠেছে শিল্পীর সৃজনের মূল বিষয়। বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিযুক্ত মানুষ তার সৃষ্টিশীলতার তাড়নাকে উস্কে দিয়েছে কিংবা প্রাণিত করেছে। অন্যদিকে নারী  দেহের  বাঁকক্রীড়ায় শুধু প্রেমাতুর আকাক্সক্ষার ছবি আঁকেননি শিল্পী। বরং কর্মের মধ্যেও নিয়ত অজস্র দেহজ মুদ্রার ছান্দসিক প্রকাশকেও মেলে ধরেছেন চিত্রপটে। এঁকেছেন কর্মনিষ্ঠ শ্রমী মানবীর বিচিত্ররূপ। আর শুধু বাঙালি নারীর নয়, অন্য নৃগোষ্ঠী নারীর  দেহসৌষ্ঠব ও তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যে ভিন্ন পাঠ রয়েছে তা নৃতাত্ত্বিক মনোযোগে পাঠ করেছেন শিল্পী জাহাঙ্গীর। তাঁর ছবিতে প্রধান দ্রষ্টব্য গতি হলেও পরিণামে গতি ও স্থিতির দ্বান্দ্বিক সমীকরণেই তিনি আস্থা খুঁজে পেয়েছেন। নন্দতত্ত্বের বিবেচনায় এ শিল্পীর কাজে প্রাচ্য আদর্শ ও পশ্চিমের  রেনেসাঁজাত শিল্পব্যাকরণের ঐক্য খুঁজে পাওয়া যায়। নকশাধর্মিতা ও অমিশ্র রঙের ব্যবহারের পাশাপাশি রয়েছে আলো-ছায়ার বিলি-বণ্টনে জ্যুম প্রমাণের উদ্যোগ। উল্লিখিত দুই আদর্শের শিল্প রচনা করে জাহাঙ্গীর হোসেন নিজের সৃজন ক্ষমতা পরখ করে  দেখেছেন। এই  দ্বৈরথেই তাঁর চিত্তের আনন্দ চলমান রয়েছে বিচিত্র পথে। সব মিলিয়ে ৬৩টি শিল্পকর্মের সম্মিলনে সেজেছে এই শিল্পায়োজন। আগামী ২৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী।