ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

ভিন্নখবর

ভিন্নখবর বিভাগের সব খবর

দুষ্টু লোকদেরই কেন বিদ্যুৎগতিতে উন্নতি হয়?

দুষ্টু লোকদেরই কেন বিদ্যুৎগতিতে উন্নতি হয়?

সমাজে একটি তিক্ত বাস্তবতা প্রতিনিয়ত আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়— যারা প্রতারণা ও অসততার আশ্রয় নেয়, তারাই যেন দ্রুতগতিতে উন্নতির শিখরে পৌঁছে যায়। পক্ষান্তরে, সৎ ও নীতিবান মানুষেরা থেকে যান অনেক পেছনে। প্রশ্ন ওঠে, পৃথিবী কি তবে প্রতারকদেরই জন্য তৈরি? আর যারা ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়, তারা কেন বারবার পিছিয়ে পড়েন? এই প্রেক্ষাপটে প্রখ্যাত জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিখ নিটশে’র দর্শন আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ দেয়। নিটশে মনে করতেন, ক্ষমতা হচ্ছে মানব সমাজের অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা। ভালোবাসা থেকে শুরু করে রাজনীতি কিংবা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্ষমতার প্রভাব সর্বত্র বিদ্যমান। তিনি ব্যাখ্যা করেন, পৃথিবীর মানুষ মূলত দুই রকম মানসিকতার অধিকারী— একদল "মনিব মানসিকতা" আর আরেকদল "দাস মানসিকতা"-এর ধারক। মনিব মানসিকতার মানুষরা সাহসী, দৃঢ়চেতা, সৃজনশীল এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন। তারা নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী পৃথিবীকে বদলে দিতে চায় এবং কোনোরূপ দ্বিধা ছাড়াই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অন্যদিকে, দাস মানসিকতার মানুষরা দুর্বল, দ্বিধাগ্রস্ত এবং পরিবর্তনের চেয়ে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। নিটশে মনে করতেন, যারা দুর্বল তারা নিজেদের সীমাবদ্ধতা ঢাকতে এমন এক আদর্শ তৈরি করেন যা মূলত আত্মরক্ষামূলক। তারা বিশ্বাস করেন, পৃথিবী ন্যায়ের জন্য নয়, কেবল কষ্টসহিষ্ণুতার জন্য। এই দৃষ্টিভঙ্গিই সমাজে প্রতারকদের উত্থানের পথ সহজ করে দেয়। কারণ সৎ মানুষেরা প্রতিযোগিতার ময়দান থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন, আর প্রতারকেরা কোনো নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে সামনে এগিয়ে যান। তবে নিটশে কেবলমাত্র নিষ্ঠুরতা ও স্বৈরাচারের পক্ষে ছিলেন না। বরং, তিনি বলতেন— নৈতিকতা এবং ক্ষমতা একে অপরের বিরোধী নয়, বরং একটি আদর্শ সমাজের জন্য এই দুইয়ের মেলবন্ধন প্রয়োজন। নিটশে’র দৃষ্টিতে প্রকৃত ‘সুপারম্যান’ সেই ব্যক্তি, যিনি সৎ, ন্যায়পরায়ণ, কিন্তু একইসঙ্গে কৌশলী, সাহসী ও ক্ষমতাবান। তিনি বলেন, সুপারম্যান নিজের শত্রু খুঁজে বেড়ায় না, বরং নিজের মধ্যে থাকা ভয়, অলসতা ও দুর্বলতার সঙ্গে লড়াই করে। তার মধ্যে থাকে দায়িত্ববোধ, আত্মনির্ভরতা ও আত্মসমালোচনার ক্ষমতা। তিনি কারো দেওয়া ক্ষমতার অপেক্ষায় থাকেন না— নিজেই নিজের অবস্থান গড়ে তোলেন। নিটশে মনে করেন, দাস মানসিকতার মানুষরা সমাজকে বদলানোর আশায় অভিযোগে মুখর থাকেন, কিন্তু পরিবর্তন আনতে হলে কৌশল ও আত্মশক্তির দরকার। শুধু সদিচ্ছা নয়, চাই পরিকল্পনা ও আত্মসংযম। অতএব, প্রশ্ন যখন আসে—আমরা কি সৎ থেকেও উন্নতি করতে পারি? নিটশে’র উত্তর— হ্যাঁ, অবশ্যই পারি। তবে সৎ হওয়ার পাশাপাশি আমাদের হতে হবে শক্তিশালী, সচেতন, কৌশলী এবং নিজের অন্তরের দুর্বলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত। দুষ্টু লোকেরা হয়তো বিদ্যুৎগতিতে শীর্ষে উঠতে পারে, কিন্তু সেই অবস্থানে টিকে থাকতে পারে না। সত্যিকারের টিকে থাকা ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব তৈরি করতে হলে চাই এমন মানুষ, যারা নীতিবান, ক্ষমতাধর এবং দায়িত্বশীল— ঠিক যেমন নিটশে’র ‘সুপারম্যান’। সমাজের পরিবর্তন তখনই সম্ভব, যখন সৎ মানুষরাও কেবল ন্যায়ের আশায় বসে না থেকে নিজের মধ্যে ক্ষমতা ও নেতৃত্বের গুণ গড়ে তোলেন। কারণ, নীতিবিহীন ক্ষমতা যেমন ভয়ংকর, তেমনি ক্ষমতাবিহীন নৈতিকতাও নিষ্ক্রিয়। ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/Anxt_VQT50I?si=vC22AlIH1veBEhtK

সামাজিকতা শিখুক শিশু

সামাজিকতা শিখুক শিশু

সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী এবং বহুমুখী প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ পুরোপুরিভাবে সামাজিক মানুষে পরিনত হয়। সমাজবিজ্ঞানী অগবার্ন বলেছেন, সামাজিকীকরণ হলো এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি, গোষ্ঠীর নিয়ম মেনে চলতে শেখে। জন্মের পর থেকে মানব শিশু সমাজের নিয়মকানুন ও রীতিনীতি শিখতে থাকে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। শিশুরা ফুলের মতো কোমল হৃদয়ের হয়। প্রাথমিক জীবনে পারিপার্শ্বিক জীবনাচরণ শিশুদের পরবর্তী জীবনের সোপান হিসেবে কাজ করে। ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ, মূল্যবোধ, নৈতিকতার বিষয়গুলো শিশুরা পরিবার, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, বিদ্যালয়, গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দেখে শিখে যা সামাজিকীকরণের অংশ। সামাজিকীকরণের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী বাহন হচ্ছে পরিবার। পরিবার শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠনের আদর্শ প্রতিষ্ঠান। শিশুদের মাঝে যে গুণাবলী গড়ে ওঠে তার অধিকাংশই শিশুরা বাবা-মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। একটি শিশু তার দৈহিক, মানসিক এবং বস্তুগত ও অবস্তুগত যাবতীয় প্রয়োজন পরিবার থেকেই মেটায়। পরিবারের সদস্যদের নৈতিকতা, মূল্যবোধ, আচরণ শিশুরা তাদের ভবিষ্যৎ আচরণ হিসেবে গ্রহণ করে এবং যা যা পরিবারে দেখছে প্রতিনিয়ত সেসব বাইরে প্রয়োগ করার চেষ্টা করে। সত্য কথা বলা, বড়দের সম্মান করা, মিথ্যা পরিহার করা, ছোটদের স্নেহ করা, ভিন্নমতকে সম্মান প্রদর্শন, ন্যায়-অন্যায়, মূল্যবোধ ইত্যাদি শেখার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান হলো পরিবার। পরিবারের সদস্যদের পরস্পরের সম্পর্ক শিশুর মানসিক বিকাশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পিতা-মাতা, ভাই-বোন, চাচা, মামা, খালা নানান সম্পর্কে জড়িয়েই আমাদের পরিবার। একক পরিবারে পিতা-মাতা ও সন্তানেরা থাকে। পিতা-মাতার মধ্যে সম্পর্ক মধুর হলেই সে পরিবারের শিশুরা সুন্দর পারিবারিক পরিবেশে নিজেদের ব্যক্তিত্ব গঠন করতে সক্ষম হয়। সুস্থ ও আনন্দঘন পরিবেশে মানসিক বিকাশের ফলে শিশুরা চাপ মুক্ত থাকে এবং সবকিছু নিয়ে নিজের মধ্যে ইতিবাচক ধারণার জন্ম হয়। যে কোনো সমস্যা মোকাবিলা করার মতো শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়। শিশুদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করলে পরবর্তী সময়ে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠে এবং যা সমাজে শিশুদের সহজ ও সুন্দর জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অপরদিকে পরিবারে একতা না থাকা এবং পরস্পরের সাহায্যসুলভ মনোভাবের অভাব শিশুর মানসিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাছাড়া পিতা-মাতার মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, মারামারি বা পারিবারিক অশান্তি বিরাজ করলে শিশুরা খারাপ মনোভাবের দিকে ধাবিত হয় যা একটি বয়সের পরে তাদেরকে অপরাধ প্রবণ করে তোলে। সন্তানদের মধ্যে তুলনা করা, একজনকে অন্যজনের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া, মেধাবী মনে করা পরস্পরে মনোক্ষুণ্ন করে তোলে। পরিবারের মধ্যেই শিশুর সামাজিক নীতিবোধ, নাগরিক চেতনা, সহযোগিতা, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ, আত্মত্যাগ ও ভালোবাসা জন্মে থাকে। সামাজিকীকরণে পরিবারের পক্ষে যা করা সম্ভব অন্য কোনো কিছুর পক্ষে তা অচিন্তনীয়। দ্বিতীয় ধাপে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধর্মীয় জ্ঞান মানুষকে ন্যায়-অন্যায়, নৈতিকতা, ভালো মন্দের পার্থক্যের শিক্ষা দেয়। সেবা, পারস্পরিক সাহায্য, অন্যায়, শত্রু মনোভাব পোষণ ইত্যাদির মধ্যে পাপ-পুণ্য কিংবা আত্মার প্রশান্তির বিষয়গুলো ধর্মের হাত ধরে মানুষের মাঝে বিরাজ করে। পৃথিবীর সকল ধর্ম মানুষের কল্যাণজনক বিষয়বস্তুর শিক্ষা দেয়। তাই সঠিক ধর্মচর্চা ও ধর্মীয় জ্ঞান শিশুদের মধ্যে দেওয়া জরুরি। নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন থেকে শিশুরা সহজেই ব্যক্তিত্ব গঠন, সামাজিক সংহতির ধারণা লাভ, নৈতিক মানসিকতা সৃষ্টি, আদর্শ বিশ্বাস ও জীবনধারা গঠনে সহায়তা করে। এছাড়াও বিদ্যালয় এবং সহপাঠী সামাজিকীকরণে দুটি উপাদান একে অপরের সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। সমাজ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানদান করে। শিক্ষার মাধ্যমেই একটি সফল সমাজ গঠন করা সম্ভব। সুশিক্ষা গ্রহণের ফলে সমাজের মধ্যে বিদ্যমান কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস, ধর্মীয় গোঁড়ামি, মানসিক সংকীর্ণতা, সাম্প্রদায়িকতা, ধনী দরিদ্র ভেদাভেদ ইত্যাদি নিমূর্ল করা সম্ভব। অন্যদিকে ভালো সহপাঠীদের সহচার্যে ব্যক্তিজীবনের উন্নতি সাধন করা সম্ভব। কথায় আছে সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে কিংবা সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। বন্ধু নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো সহপাঠীদের সংস্পর্শ শিশুদের জীবনকে ভালো পর্যায়ে নিয়ে যায়। দেশ ও জাতির কল্যাণে অগ্রগামী হয়। কাজেই শিশুর যথাযথ সামাজিকীকরণ নিশ্চিত করতে ছোটবেলা থেকেই অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের অত্যন্ত সচেতন থাকা বাঞ্ছনীয়। যোগ্য মানুষ গড়ে তোলার মহান লক্ষ্যে প্রতিটি নাগরিকের সচেতন ভূমিকা পালন করা উচিত।

কীভাবে বসের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখবেন

কীভাবে বসের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখবেন

স্পষ্ট ও সম্মানজনক যোগাযোগ: বসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার প্রথম শর্ত হলো, স্পষ্ট যোগাযোগ। কোনো ভুল বোঝাবুঝি যাতে না হয় সেজন্য সময়মতো তথ্য দেওয়া, প্রশ্ন করা এবং আপডেট জানানো। অহেতুক অনুমান বা গুজবের ওপর ভিত্তি করে কিছু না বলা উচিত। সম্মান দেখিয়ে কথা বলা, ইমেইল বা মেসেজে পেশাগত শব্দ ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি।   কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতা: আপনার বসের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হলে, প্রমাণ করতে হবে আপনি আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এবং নিষ্ঠাবান। সময়মতো কাজ জমা দিলে এবং নিজের কাজের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করলে বসের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়। বস যদি বুঝতে পারেন তার অধীনে থাকা কর্মী দায়িত্ব নিতে সদা প্রস্তুত থাকেন, তবে উক্ত কর্মী এবং বসের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়। সীমা বজায় রাখা: কর্মক্ষেত্রে পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে অনেক সময় সীমারেখা হারিয়ে যায়। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যক্তিগত হওয়া কিংবা বসের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করা কখনোই পেশাদার আচরণ নয়। বস যদি অনানুষ্ঠানিক পরিবেশেও কথা বলেন, তবুও নিজেকে সামলে চলা এবং পরিমিত আচরণ করা জরুরি। মতবিরোধের সময় শালীনতা: সবসময়ই বসের সঙ্গে হয়তোবা একমত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু মতবিরোধ প্রকাশের ধরনটাই নির্ধারণ করে সম্পর্ক টিকবে কি না। সংযত ভাষা, যুক্তিভিত্তিক ব্যাখ্যা এবং সমাধানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি বসকে বোঝায় আপনি পেশাদার এবং সমস্যার সমাধান চান। বসের সঙ্গে কখনোই ব্যক্তিগত আক্রমণ বা অভিযোগের ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ : কাজের ক্ষেত্রে বস যখন কোনো সহযোগিতা করেন, প্রশংসা করেন, কিংবা কোনো সুযোগ করে দেন- তখন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা একটি ভদ্রতা এবং সম্পর্ক গড়ার একটি ভালো উপায়। তবে তা যেন চাটুকারিতা না হয়ে যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বসের সঙ্গে একটি পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয় হলেও, একজন কর্মীর ক্যারিয়ারের জন্য এটি অত্যন্ত মূল্যবান। সম্মান, দায়িত্বশীলতা, এবং যোগাযোগ দক্ষতা থাকলে এই সম্পর্ক শুধু ভালোই হয় না, বরং কর্মক্ষেত্রের সামগ্রিক পরিবেশও হয়ে ওঠে ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ।

বৈশাখের খরতাপে...

বৈশাখের খরতাপে...

বৈশাখ মানেই যখন তখন কালবৈশাখীর তাণ্ডব। এই কটকটে রোদের তীব্র গরমে পুড়ে সিদ্ধ হয়ে যাই অবস্থা। আবার এক্ষুণি অন্ধকার হয়ে নামে ঝুম বৃষ্টি। কোথাও দাওয়াতে যাবেন, শাড়ি-গয়না অথবা সুন্দর দামি পাঞ্জাবি পরে জমকালো সাজে তৈরি হলেন, আর হুট করেই চারদিক অন্ধকার হয়ে ঝড়-বৃষ্টির আনাগোনা শুরু হলো। হয়ত প্রকৃতিতে বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হলো, কখনো আবার অন্ধকার পর্যন্তই সার। তৈরি হয়ে হয়ত বেরিয়ে পড়লেন। ঝড়-বৃষ্টি কিছুই হলো না, বেঁচে গেলেন। আরামসে দাওয়াত শেষ করে চলে এলেন। কিন্তু যদি তার বিপরীত হয়? তাই প্রস্তুতি রাখতে হবে সব পরিস্থিতিরই। যেহেতু সামাজিকতা রক্ষা করতেই হবে, তাই প্রকৃতির কথা মাথায় রেখে সেভাবেই তৈরি হতে হবে। ১. জমকালো পোশাক পড়লেও এমন কাপড় বেছে নিন, যাতে বৃষ্টিতে ভিজলেও দ্রুত শুকিয়ে যায়। তাহলে ওখানে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। ২. বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়াটার প্রুফ মেকআপ পাওয়া যায়। আপনার ত্বকের ধরন বুঝে তেমন কিছু মেকআপ কিনে নিন, তাহলে চোখেমুখে বৃষ্টির ছটা পড়লেও আপনার সাজ নষ্ট হবে না। ৩. এ সময় হাতব্যাগটা একটু বড় নিন, যাতে করে ওর মধ্যে ছোট একটা ছাতা নেওয়া যায়। মার্কেটে ছোট ফোল্ডিং করা সুন্দর ডিজাইনের ছাতা পাওয়া যায়। ধরন বুঝে দাম শুরু ৩০০ টাকা থেকে। সামর্থ্যমতো ছোট একটি ছাতা রাখুন ব্যাগের মধ্যে। হঠাৎ বৃষ্টি এলে কিছু সময়ের জন্য তা আপনাকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করবে। শুধু তাই নয়, ইদানীং যে তীব্র রোদ আর তাপ পড়ছে প্রকৃতিতে, এই রোদ-তাপ থেকেও ছাতা আপনাকে আর আপনার ত্বককে রক্ষা করবে। ৪. সঙ্গে ছোট একটি পানির বোতল রাখুন। পথে এখন যানজটও বেড়েছে। তীব্র গরমে গলা শুকিয়ে খুব পানি পিপাসা হয়। দীর্ঘ সময় পানির প্রয়োজনীয়তা তীব্র হতে পারে। তাই ব্যাগে একটা পানিভর্তি বোতল থাকলে তৎক্ষণাৎ পানির চাহিদা মেটাতে পারবেন। ৫. বাসা থেকে যখন যে কাজেই বের হবেন অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে মুখে সানস্ক্রিন ক্রিম লাগান। এতে রোদে পোড়া থেকে আপনার ত্বক রক্ষা পাবে। ৬. গ্রীষ্মকালের এই তীব্র গরমে ত্বক পুড়ে যায়, শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। এ সময় ত্বকে ব্রণ ও ইরিটেশনসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। আর সূর্যের প্রখর ইউভি রশ্নি আমাদের ত্বকের ভীষণ ক্ষতি করে। তাই কিছু নিয়ম মেনে চলুন। ৭. ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে এর আর্দ্রতা ধরে রাখা জরুরি। তাই প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। মৌসুমি ফল ও শাকসবজি রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। এতে আপনার ত্বক শুষ্কতা ও রুক্ষতা থেকে সুরক্ষিত থাকবে। ৮.  তীব্র গরম, ধুলাবালি, ঘাম থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করুন। বাইরে থেকে এসে মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিন ফেসওয়াশ। এটি ত্বকের মৃত কোষও পরিষ্কার করবে। ৯. এই গ্রীষ্মে জেল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বককে স্বস্তি দেবে। সুদিং জেল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে তো কার্যকরই, এটি সানট্যান রিমুভার হিসেবেও দারুণ। ব্রণ দূর করতেও কার্যকর। ১০. সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে এসপিএফযুক্ত ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।