
আজ ১৭ জুলাই, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব ইমোজি দিবস—একটি অনানুষ্ঠানিক দিবস যা ছোট ছোট ডিজিটাল প্রতীকের বিশাল সাংস্কৃতিক প্রভাবকে উদ্যাপন করে। এই দিবসটি প্রথম পালিত হয় ২০১৪ সালে, এবং অ্যাপলের ক্যালেন্ডার ইমোজির তারিখ অনুসারে ১৭ জুলাই-ই এই দিবসটির নির্ধারণ করা হয়।
ইমোজির জন্ম কোথায়?
ইমোজির সূচনা হয়েছিল জাপানে ১৯৯৯ সালে। জাপানি মোবাইল ফোন কোম্পানি NTT DoCoMo-র জন্য শিগেতাকা কুরিতা নামের এক ডিজাইনার প্রথম ১৭৬টি ইমোজি তৈরি করেন। এর আগেই ১৯৮২ সালে স্কট ফাহলম্যান অনলাইনে আবেগ প্রকাশের জন্য প্রথম ইমোটিকন ব্যবহার করেন—যেমন :-) এবং :-(।
"ইমোজি" শব্দটি এসেছে জাপানি ভাষা থেকে—"e" মানে ছবি এবং "moji" মানে অক্ষর। শুরুতে এটি ছিল শুধুমাত্র জাপানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের অংশ, কিন্তু ধীরে ধীরে এটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বময় গ্রহণযোগ্যতা ও স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন
২০১০ সালে Unicode 6.0 সংস্করণে প্রথম ৭২২টি ইমোজি অন্তর্ভুক্ত হলে বিশ্বব্যাপী এই প্রতীকগুলোর ব্যবহারে একতা আসে। Unicode স্ট্যান্ডার্ডের অন্তর্ভুক্তির ফলে, আজ ইমোজি ব্যবহার করা যায় সব ধরনের অপারেটিং সিস্টেম ও প্ল্যাটফর্মে, যার ফলে তা হয়ে উঠেছে একটি সর্বজনগ্রাহ্য ডিজিটাল ভাষা।
সাংস্কৃতিক প্রভাব ও বৈচিত্র্য
২০১৫ সালে "Face with Tears of Joy" 😂 ইমোজিটিকে অক্সফোর্ড ডিকশনারি 'ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার' ঘোষণা করে—যা প্রমাণ করে ডিজিটাল যুগে ইমোজির ভাষাগত শক্তি ও সামাজিক প্রভাব কতটা গভীর।
বছরের পর বছর ধরে ইমোজি সেটে যুক্ত হয়েছে চামড়ার রঙের বিকল্প, নারী-পুরুষ উভয়ের বিভিন্ন পেশার চিত্র, এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতীক—যা ইঙ্গিত করে বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির প্রতি এর প্রতিশ্রুতি।
আজকের দিনে ইমোজি কী?
আজ, ইমোজি শুধুমাত্র মেসেজিং অ্যাপে রঙিন প্রতীক নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী প্রকাশভঙ্গি—যা চলচ্চিত্র, সংগীত, পণ্য ব্র্যান্ডিং, এবং এমনকি রাজনৈতিক বার্তা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
বিশ্ব ইমোজি দিবসের এই দিনে আমাদের স্মরণে রাখা উচিত, এই ছোট্ট ডিজিটাল চিহ্নগুলো আধুনিক সমাজে আবেগ, পরিচয় ও সংযোগ প্রকাশের এক সার্বজনীন মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
Jahan