ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই প্রাণঘাতী রোগ, কাজ করছে না ওষুধও! নতুন সমীক্ষায় আশঙ্কা চরমে

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ১৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:৩৫, ১৬ জুলাই ২০২৫

দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই প্রাণঘাতী রোগ, কাজ করছে না ওষুধও! নতুন সমীক্ষায় আশঙ্কা চরমে

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে আবারও নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড জ্বর। বিবিসির একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ এই জ্বরে আক্রান্ত হন এবং প্রাণ হারান অন্তত ১ লক্ষ ৩৩ হাজার মানুষ।

এই উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এনেছে যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি। তাদের এক সমীক্ষা বলছে, শুধু ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডেই ২০২৪ সালে টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০৪ জনে— যা আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি।

টাইফয়েড রোগটি মূলত সালমোনেল্লা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়, যা দূষিত পানি ও খাবার থেকে ছড়ায়। যদিও অধিকাংশ সংক্রমণ ঘটে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, তথাপি এখন উন্নত বিশ্বেও এটি স্বাস্থ্যঝুঁকির বড় কারণ হয়ে উঠছে।

ওষুধেও কাজ হচ্ছে না!

বিশেষভাবে আশঙ্কার বিষয় হলো, পাকিস্তানসহ কিছু দেশে টাইফয়েডের ড্রাগ-রেসিস্ট্যান্ট স্ট্রেন বা ওষুধ-প্রতিরোধী প্রজাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। অর্থাৎ, প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও অনেকক্ষেত্রে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, টাইফয়েড এখন ‘সুপারবাগ’-এ রূপ নিচ্ছে, যার বিরুদ্ধে সাধারণ ওষুধগুলো কার্যকর নয়। এটি চিকিৎসা ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ সংকেত।

২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে নেপাল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারত থেকে সংগ্রহ করা ৩৪৮৯টি সালমোনেল্লা টাইফি স্ট্রেন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে— এই ব্যাকটেরিয়াগুলো এখন অ্যাম্পিসিলিন, ক্লোরামফেনিকল, ট্রাইমেথোপ্রিম/সালফামেথোক্সাজোলের মতো অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াও ফ্লুরোকুইনোলোন এবং তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিনের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করছে।

শিশু-কিশোররাই সবচেয়ে ঝুঁকিতে

এই রোগটি সাধারণত এশিয়া ও আফ্রিকার স্কুলপড়ুয়া শিশুদের বেশি আক্রান্ত করে। উন্নত বিশ্বে এখনো অনেকাংশে অবহেলিত হলেও, আধুনিক আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে এটি এক বৈশ্বিক হুমকিতে রূপ নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিস্তার ঠেকাতে এবং মৃত্যু হার কমাতে নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবন এবং প্রতিরোধমূলক টিকা ও জনসচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকদের মতে, এখন সময় এসেছে টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েডের মতো রোগগুলোর প্রতি আন্তর্জাতিক নজরদারি ও সম্মিলিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করার। না হলে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে বিশ্ব।

সূত্রঃ এবিপি আনন্দ

ইমরান

×