
ছবি: সংগৃহীত
কলেস্টেরলকে দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, এখন অনেক চিকিৎসকই বলছেন, চিত্রটা এতটা সোজা নয়। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন খ্যাতনামা কার্ডিওলজিস্ট ও ফাংশনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আলোক চোপড়া।
তিনি ৮ জুলাই এক পোস্টে লেখেন,
“এখন সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর। আপনার শরীরের কলেস্টেরল প্রয়োজন, আসল বিষয় হলো বুঝে নেওয়া এটা কীভাবে কাজ করে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”
মস্তিষ্ক ও হরমোনের জন্য কলেস্টেরল অত্যাবশ্যক
ডা. চোপড়া বলেন,
কলেস্টেরল কোনো ‘ভিলেন’ নয়। বরং এটা শরীরের হরমোন উৎপাদন, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও কোষ মেরামতের জন্য অপরিহার্য।
মস্তিষ্ক হচ্ছে আমাদের শরীরের সবচেয়ে বেশি ফ্যাটসমৃদ্ধ অঙ্গ, এবং এর সঠিক কার্যক্রমের জন্য কলেস্টেরল অপরিহার্য।
স্ট্যাটিন ওষুধ কি সর্বদা প্রয়োজনীয়?
বর্তমানে এলডিএল (LDL) বা ‘খারাপ’ কলেস্টেরল বেশি দেখলেই অনেক রোগীকে স্ট্যাটিন ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু ডা. চোপড়া সতর্ক করে বলেন—
“চোখ বন্ধ করে স্ট্যাটিন খাওয়ার চেয়ে আগে বুঝতে হবে, শরীরে আসল সমস্যা কোথায়। আপনি কি কেবল উপসর্গ কমাচ্ছেন, নাকি মূল কারণ—দীর্ঘমেয়াদী ইনফ্ল্যামেশন—সমাধান করছেন?”
স্ট্যাটিন অনেক সময় মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, স্মৃতিভ্রংশ, মাংসপেশির ভাঙন এবং এমনকি আগাম ডিমেনশিয়ার উপসর্গও তৈরি করতে পারে।
“ফায়ারফাইটারকে দোষ দেওয়া” – ভুলটা কোথায়?
তিনি বলেন—
“যখন রক্তনালিতে ক্ষতি বা প্রদাহ হয়, তখন কলেস্টেরল সেখানে গিয়ে ক্ষত মেরামত করে। এটা সমস্যা নয়, বরং প্রতিক্রিয়াশীল রক্ষাকারী। কিন্তু আপনি যদি প্রদাহের উৎস—অস্বাস্থ্যকর খাবার বা স্ট্রেস—না বদলান, তাহলে বারবার সেই ক্ষত হবে আর কলেস্টেরল জমা হবে।”
এই চক্রে পড়ে গেলে আমরা কলেস্টেরলকে দায়ী করি, মূল কারণকে নয়।
“এটা যেন আগুন লাগলে দমকলকর্মীদের দোষ দেওয়া,”—উল্লেখ করেন তিনি।
ডা. চোপড়া সরাসরি বলেননি যে স্ট্যাটিন একেবারে খারাপ। বরং জরুরি পরিস্থিতিতে স্বল্পমেয়াদে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু বহু রোগীকে বছরের পর বছর ওষুধে রেখে, মূল কারণ না খতিয়ে দেখার প্রবণতা নিয়েই তাঁর আপত্তি।
এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যভিত্তিক। কোনো স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আঁখি