
ছবি: সংগৃহীত
আজ মহররম মাসের ১০ তারিখ। সারাবিশ্বজুড়ে মুসলিম উম্মাহর জন্য এই দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও শোকাবহ এক দিন। হিজরি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা হিসেবেও পরিচিত।
আশুরা কারবালার হৃদয়বিদারক ও স্মৃতিময় একটি দিন। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনাবহুল দিনটি মুসলিম বিশ্বে অতি গুরুত্বের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সাথে মুসলিম সম্প্রদায় পালন করে থাকে। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এই পবিত্র আশুরা বা ১০ মহররম পালন করা হয়ে থাকে।
পবিত্র আশুরা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে কিছু বিশেষ আমল করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। আশুরার দিন রোজা রাখা, দান-সদকা করা, বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, কোরআন তেলাওয়াত করা, তওবা ও ইস্তিগফার করা এবং আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেয়া ইত্যাদি আমল করা হয়ে থাকে।
আশুরার দিনের বিশেষ আমলগুলো হলো:
রোজা রাখা:
আশুরার রোজা রমজানের পর সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ রোজা। এই দিনে একটি রোজা রাখার পাশাপাশি, এর আগের অথবা পরের দিন মিলিয়ে দুটি রোজা রাখাও সুন্নত।
দান-সদকা করা:
আশুরার দিনে গরিব ও অসহায়দের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া এবং তাদের দান-খয়রাত করা উচিত।
ইবাদত বন্দেগী করা:
নফল নামাজ আদায় করা, কোরআন তেলাওয়াত করা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া ও কান্নাকাটি করার মাধ্যমে এই দিনের ফজিলত অর্জন করা যায়।
তওবা ও ইস্তিগফার করা:
আশুরার দিনে অতীত কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং আগাম ভবিষ্যতে পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করা উচিত।
আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেয়া:
আশুরার দিনে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করা, তাদের খোঁজ-খবর নেয়া এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা উচিত অথবা তাদের জন্য উত্তম আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা।
অন্যান্য নফল ইবাদত:
এই দিনে অন্যান্য নফল ইবাদত, যেমন- তাসবিহ তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করাও ফজিলতপূর্ণ। যেমন: পবিত্রতার সাথে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া, কমপক্ষে দুটি নফল রোজা রাখা, সহি শুদ্ধতার সাথে কোরআন তেলাওয়াত করা। এই আমলগুলোর মাধ্যমে আশুরার দিনের পূর্ণ ফজিলত অর্জন করা সম্ভব।
সেইসাথে সকল মুসলমানদের মনে রাখতে হবে পবিত্র এই আশুরা শুধুমাত্র ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে এবং ইসলামের সঠিক নিয়ম অনুসারেই পালন করা উচিত। বর্সতমানে কিছুক্ষেত্রে সমাজে এই পবিত্র দিনটিকে উদ্যেশ্য করে কিছু অপসাংস্কৃতির রেওয়াজ প্রচলিত হতে দেখা যাচ্ছে যা কিনা ইসলামপন্থীর অন্তর্ভুক্ত নয় বলে বিজ্ঞ আলেমদের ধারণা। তাই আমাদের উচিত ভালো আমল দ্বারা দিনটিকে অতি গুরুত্বের সাথে অতিবাহিত করা। সেইসাথে সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে পবিত্র এই দিনটিতে অতিরিক্ত সওয়াবের আশায় নাজেনেবুঝে নিজেদের ইসলাম বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড বা অপসাংস্কৃতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে ফেলি। অন্যথায় পূণ্যের পরিবর্তে ইবাদতের ভালো আমল গুলো বেদাতে পরিনত হওয়ার সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ঈমানদার মুসলমানদের জেনেবুঝে এই পবিত্র দিনটিতে শুধুমাত্র নফল ইবাদতের মাধ্যমেই অতিবাহিত করা উচিত এবং ইসলামপন্থী নয় এমন কার্যক্রম থেকে সকলকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুন।
আঁখি