
আরবি সনের প্রথম মাস মহররম। এ মাসের ১০ তারিখ আশুরা। মুসলমানদের কাছে আশুরা এক পবিত্র ও তাৎপর্যময় দিন। এই দিনটি শুধু শোকের নয়, বরং পাপমুক্তি ও আল্লাহর রহমত লাভের আশার দিনও।
হাদিসে বর্ণিত আছে, রমজানের পর সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ রোজা হলো আশুরার রোজা। শুরুতে এ রোজা ফরজ ছিল। কিন্তু রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর এটি নফল হিসেবে থেকে যায়। তবুও ফজিলতের দিক থেকে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
আশুরার রোজার গুরুত্ব কী বলছেন নবীজি (সা.)?
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “আমি নবীজি (সা.)-কে রমজান ও আশুরার মতো গুরুত্ব দিয়ে অন্য কোনো রোজা রাখতে দেখিনি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১/২১৮)
অন্য এক হাদিসে হজরত হাফসা (রা.) বলেন, “নবীজি (সা.) চারটি আমল কখনো বাদ দিতেন না— আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশ দিনের রোজা, প্রতিমাসের তিনটি নফল রোজা এবং ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ।” (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৪১৫)
সহিহ মুসলিমের হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, “রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পরে সর্বোত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।” (সহিহ মুসলিম ১/৩৫৮)
হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) বলেন, “আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা রাখি, তিনি রোজাদারের অতীত এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬২)
অপর এক হাদিসে তিনি (সা.) বলেন, “রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখ। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন।” (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৭)
আশুরার রোজা কয়টি রাখা উচিত?
মুসনাদে আহমদের হাদিসে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেন, “তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখ। এবং আশুরার আগের দিন অথবা পরের দিন আরও একটি রোজা রেখে দিও।” (হাদিস : ২১৫৪)
অর্থাৎ আশুরার রোজা ২টি। আশুরার দিন একটি এবং এর আগের দিন অথবা পরের দিনসহ মোট ২টি রোজা রাখা সুন্নত।এ বছর ৫ ও ৬ জুলাই (শনিবার ও রোববার) অথবা ৬ ও ৭ জুলাই (রোববার ও সোমবার) এই দুই দিন রোজা রাখা যেতে পারে।
মিমিয়া