
ছবিঃ সংগৃহীত
৬ জুলাই, ২০২৪ সালের স্মৃতিচারণ করেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যা তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রকাশ করেছেন।
তিনি ৬ জুলাই, ২০২৪ সালের একটি সংবাদ শেয়ার করেন। যার শিরোনাম "প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি"।
সংবাদের বিস্তারিত
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বহালের দাবিতে চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার মতো কয়েকজন শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে সমন্বয় এবং প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে প্রয়োজন হলে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, সরকার যদি দাবি মানতে বিলম্ব করে, তাহলে সুযোগসন্ধানীরা এই আন্দোলনের মধ্যে প্রবেশের চেষ্টা চালাতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষার্থী জানান, রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী যখন কোনো কিছু কার্যকর করেন, তখন সেটি যৌক্তিকভাবেই কার্যকর করেন। হাইকোর্ট যে বিষয়টা বলেছে, পরিবর্তন কিংবা সংস্কার করার, সেটি সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সময় নিয়ে সরকার পরবর্তীতে করুক, তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে ততদিন পর্যন্ত যেন ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল থাকে। সেটি নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকবো।
২০১৮ সালের সেই পরিপত্রকে সম্প্রতি অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে সরকারের শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা কী, এ নিয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা এই শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। এজন্য যদি নতুন পরিপত্র জারি করতে হয়, সরকার সেটিও করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের দাবির এই যৌক্তিকতা ইতিমধ্যে সর্বমহল থেকে তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষক, সুধীজন, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাদের দাবির সঙ্গে একমত। সরকারের পলিসি আমাদের জন্য, হাইকোর্ট আমাদের জন্য, প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য। তাই আমাদের অধিকারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তারা দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত নিবে, এটাই আমরা আশা করি। সংকট নিরসনে তিনি আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের সমন্বয় সাধনের কথাও বলেন।
তিনি বলেন, আমরা টেবিল থেকে আন্দোলনের মাঠে এসেছি। দাবি আদায় হলে আবার টেবিলে ফিরে যাবো। পরবর্তীতে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাজনীতির কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। সরকার যদি মনে করে এ আন্দোলনে কেউ সুবিধা আদায় করতে পারে, সেক্ষেত্রে আমরাও ঝুঁকিতে রয়েছি। কেননা, সরকার যদি দাবি মানতে দেরি করে, তবে কেবল তখনই সুযোগসন্ধানীরা ভিন্নখাতে আন্দোলনকে প্রবাহিত করার সুযোগ পাবে। সরকার যদি আজ কিংবা আগামীকালই একটা সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলেই আন্দোলন শেষ, সবাই আবার টেবিলে ফিরে যাবো। দাবি আদায়ের পরেও যদি কেউ মাঠে থাকতে চায়, তবে সে সুবিধাবাদী। তাই রাষ্ট্রের সব বিভাগের মধ্যে যত দ্রুত সমন্বয়ের মাধ্যমে কোনো সমাধান আসে, ততই ছাত্রদের জন্য মঙ্গল।
বৃহস্পতিবার শাহবাগ অবরোধকালে আন্দোলনে আরেক সমন্বয়ক নাহিদুল ইসলাম জানান, সরকারের পক্ষ থেকে এখনো তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। সরকার যদি ছাত্রদের দাবিতে ইতিবাচক সাড়া না দেয়, সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনা কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা যদি দেখি আমাদের দাবি আমলে নেয়া হচ্ছে না, তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে জানমালের ক্ষতি না করে আমরা আন্দোলনকে আরও কঠোর থেকে কঠোরতর করবো। যেভাবে আন্দোলন করলে ফলপ্রসূ হবে, আমরা সেভাবেই এগিয়ে যাবো।
মারিয়া