
বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমা ও সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাশ
বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমা ও সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাশসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন একই কমিটির সহসভাপতি আবদুর রহিম চৌধুরী। জমি ও ভবন দখল এবং ভাড়ার টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগে গত ২৬ জুন জেলা সদরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করা হয়। রবিবার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী রাজীব চন্দ্র ধর।
আইনজীবী জানান, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে বিবাদীদের ২৯ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া আবাহনী ক্রীড়াচক্রের জেলা সভাপতি দাবি করে মামলার বাদী আবদুর রহিম চৌধুরী মামলার আবেদনে উল্লেখ করেন, ১৯৮৭-৮৮ সালে বাজার ফান্ড থেকে আবাহনীর নামে সি-২২৬ নম্বর প্লটে ৩৬০ বর্গফুট জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়। পরে তিনি ব্যক্তিগত অর্থায়নে সেখানে একটি ভবন নির্মাণ করেন। ভবনের নিচতলায় দোকান এবং দ্বিতীয় তলায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালে মাসিক ১ হাজার ৮০০ টাকায় ভাড়া চুক্তি হলেও জেলা আওয়ামী লীগ কোনো ভাড়া পরিশোধ করেনি।
বাদীর দাবি, ২০২৩ সালে ওই জমির একাংশ জেলা আওয়ামী লীগের নামে দলিল করে নেওয়া হয়েছে। তিনি আদালতের কাছে দলিল বাতিল ও জমির মালিকানা পুনরায় তাঁর নামে স্বত্ব ঘোষণা চেয়েছেন।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং বাজার ফান্ডের প্রশাসক পদে থেকে নিজেই নিজের নামে জমির বন্দোবস্ত অনুমোদন দেন। লক্ষ্মীপদ দাশও তখন জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আবদুর রহিম চৌধুরীর আরও দাবি করেন, তাঁকে খুশি রাখার কথা বলে জেলা পরিষদ থেকে আবাহনীর জমিতে ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের আশ্বাস দেন ক্যশৈহ্লা ও লক্ষ্মীপদ। ওই প্রকল্প অনুমোদনের খরচ হিসেবে তাঁর কাছ থেকে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হলেও পরে প্রকল্প বাতিল করে ওই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
তবে আবাহনী ক্রীড়াচক্রের ১৯৮৭ সালের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল কান্তি দাশ বলেন, সে সময় কমিটির সভাপতি ছিলেন বর্তমানে জেলা বিএনপির সভাপতি সাচিংপ্রু জেরী ও সহসভাপতি ছিলেন আবদুর রহিম। তাঁর জানা মতে, এরপর আর কোনো কমিটি হয়নি। রহিম কীভাবে সভাপতি হলেন, তা জানা নেই।
আবদুর রহিম চৌধুরী বলেন, তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে
পারেননি। তাঁর কাছে থাকা আবাহনী কমিটি, জমির দলিল ও ভাড়ার নথিপত্র হারিয়ে গেছে। তবে ১৯৯২ সালে আবাহনীর নতুন কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমা বর্তমানে পলাতক এবং সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাশ কারাগারে আছেন।
জেলা পরিষদের বাজার ফান্ড শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আবাহনী ক্রীড়াচক্রের জমির একাংশ ২০২৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খাজনা না দেওয়ায় আবাহনী ক্রীড়া চক্র ও আওয়ামী লীগের জমির বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে। ওই জমিতে বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ ও বাজার চৌধুরীর কার্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
Mily