
জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজের এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, রবিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় দেশের দুটি গণমাধ্যম এমন ফটো কার্ড প্রকাশ করেছে, যা বোঝানোর চেষ্টা করছে যে আমি জনসমক্ষে “হাফ প্যান্ট” পরে ছিলাম।
এই প্রতিবেদনগুলোর কেন্দ্রে একটি ছবি, যা স্পষ্টতই এআই বা অন্য কোনো উপায়ে বিকৃত করা হয়েছে।উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট: বিতর্ক উসকে দেওয়া, অপমান করা, এবং আমার মর্যাদা নষ্ট করা।
তারা কোথাও বলেনি যে ছবিটি ভুয়া। কিন্তু এমনভাবে উপস্থাপন করেছে যাতে সন্দেহ ছড়ায়, কানাঘুষো শুরু হয়, এবং আমার ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করা যায়।
আসল সত্য হলো:
এই দুইটি গণমাধ্যম দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ শাসনের পক্ষেই কাজ করেছে। এখন তারা আবারও সেই পুরনো কর্তৃত্ববাদী কৌশলে ফিরেছে—যেখানে অপপ্রচার আর বিকৃতির আশ্রয় নেওয়া হয়। যখন সত্য তাদের পক্ষে থাকে না, তখন তারা কেলেঙ্কারির গল্প বানায়। যখন তারা একজন নারীর কাজকে কাবু করতে পারে না, তখন তারা তার দেহ নিয়ে আক্রমণ করে।
এই গণমাধ্যমগুলো দীর্ঘদিন ধরে সেই শাসকের প্রোপাগান্ডা যন্ত্রের অংশ ছিল, আর এখন ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা’র মুখোশ পরে সেই ভূমিকাই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার উন্মোচন করছে না—বরং ক্ষমতাকে আড়াল করছে, এমনকি তার পতনের পরও।
এই অপকৌশলটি বিপজ্জনক শুধু মিথ্যার কারণে নয়, বরং এর উপস্থাপনার ধূর্ততার জন্য:
তারা সত্য নয়, ইঙ্গিতের উপর ভরসা করে। শিরোনামে কোথাও লেখা নেই ‘আসল ছবি’, কিন্তু ‘ভুয়া’ বলেও কিছু বলা হয়নি। এই দ্ব্যর্থতা—এই অস্পষ্টতাই তাদের অস্ত্র।
তারা ভরসা রাখে নারীবিদ্বেষের উপর—এই সমাজে গেঁথে থাকা সেই বিশ্বাসের উপর যে, একজন নারীর বিশ্বাসযোগ্যতাকে তার পোশাক দিয়েই ভেঙে ফেলা যায়।
তারা নির্ভর করে সংস্কারপন্থী সমাজের শাসনযন্ত্রের উপর, কারণ জানে—অল্প একটু “অশোভনতা”-র ইঙ্গিতই একজন নারীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যথেষ্ট।
আমি কোনো ভুয়া ছবির বোঝা বইব না। আমি পিছিয়ে আসব না, কারণ কেউ একটা ছবি মেশিনে দিয়ে তা বিক্রি করেছে সত্য হিসেবে। আমি এই বর্ণনাটিকে ছিনতাই হতে দেব না, কারণ দেশের মানুষের জন্য যে প্রকৃত কাজ বাকি আছে, তা অনেক বড়।
তাই, যারা পড়ছেন—তাদের প্রতি আমার অনুরোধ: এই ডিজিটাল প্রতারণা দিয়ে যারা একজন নারীর মর্যাদা ধ্বংস করতে চেয়েছিল, তা মনে রাখবেন। মনে রাখবেন, কোন কোন সংবাদপত্র সত্য যাচাই না করেই সেটিকে ছড়িয়েছে। এবং মনে রাখবেন, এটি শুধু আমার ব্যাপার নয়। এটি সেই রাজনীতির ব্যাপার, যা আমরা পেছনে ফেলতে চাই। এবং সেই নতুন রাজনীতির গল্প, যা আমাদের একসাথে গড়ে তুলতে হবে।
আমাকে থামাতে তাদের মিথ্যা বানাতে হয়েছে। আমি সত্য বলেই যাব। আর আমি জানি—সত্য তাদের চেয়ে অনেক দীর্ঘজীবী হবে।
রিফাত