
ছবি: জনকণ্ঠ
মানিক মোল্লা বয়স একশ এ বয়সেও ইট ভাঙ্গা শ্রমে জীবন চলে তার। ৪০ বছর আগের কথা তখন বয়স ছিল ৬০ বছর। অভাবের সংসারে জীবন কাটত। চারদিকে ছিল ঘোর অন্ধকার। অভাবের যন্ত্রণায় কি করুম বুঝতে পারছিলাম না। পরে আরেকজনের পরামর্শে ইট ভাঙার কাজে লাইগা পরি। মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ফুট হিসাবে ইট ভাঙ্গার কাজ শুরু করি। এভাবেই ইট ভাঙ্গা শ্রমে জীবন চলার কথা জানাচ্ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার পৌর শহরের নারায়ণপুর গ্রামে অন্যের বাড়িতে বসবাস করা মানিক মোল্লা।
মানিক মোল্লা বলেন, আমার বর্তমান বয়স একশর উপরে। আমি একজন অসহায় মানুষ অর্থ সম্পদ কিছুই নেই। ৪০ বছর ধরে ইট ভেঙ্গে ভাত খাচ্ছি। আমার থাকার জায়গা নেই, নারায়নপুর অন্যের বাড়িতে থাকি। আমার চার ছেলে, দুই মেয়ে, তারাও দিনমজুর কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছে। আমি একা আলাদা থাকি। আমার ইনশাল্লাহ কোন রোগ নেই, ডাক্তার দেখাতে হয় না। ৪০ বছর ধরে হাতুড়ি নিয়ে ইট ভাংছি। বাকি জীবনটা ইট ভেঙ্গে কাটাতে চাই। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ২০-২৫ টাকা ফুটে ইট ভাঙ্গি। দৈনিক চার পাঁচশ টাকা রোজগার হয়। তা দিয়ে আমি চলতে পারছি ইনশাল্লাহ।
ইট,বালু,পাথর মালিক মোঃ শামীম মোল্লা জানান, প্রতিদিন ইট ভেঙ্গে শ্রমিকরা প্রতি ফুটে ২০-২৫ টাকা করে পায়। তারা দৈনিক ৩০-৩৫ ফুট ইট ভাঙতে পারে। এতে করে প্রতিজন শ্রমিক দৈনিক ৬০০-৭০০ টাকা আয় করতে পারে। বর্তমানে ইট ভাঙ্গার মেশিনে ইট ভাঙ্গা হয় বেশি। তারপরও তাদের দিয়ে ইট ভাঙ্গানো হয়। হাতে ভাঙ্গা ইটের শুকরী মেশিনের চেয়ে মালের দিক দিয়ে ভাল হয়।
নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আখাউড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর, মোঃ মন্তাজ মিয়া বলেন, মানিক মোল্লা বিগত অনেক বছর ধরে আখাউড়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইট ভাঙ্গার কাজ করছে। এতে করে বিভিন্ন স্থাপনা, পাকা ভবন ও বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। তিনি বহু বছর ধরে নারায়ণপুর গ্রামে মাজারের খানকা এবং অন্যের বাড়িতে বসবাস করছেন। আমাদের গ্রাম বাসিও বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করে আসছে।
সাব্বির