
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া, ছাতিয়াইন ইউনিয়নে হলুদ চাষ করে সহস্রাধিক কৃষকের ভাগ্য বদল হয়েছে। এ বছর হলুদের ভালো ফলন ও চড়া দাম পাওয়ায় কৃষকরা সফলতার মুখ দেখছেন। আগে এসব এলাকার ভূমি পতিত পড়ে থাকত। এখন মসলা জাতীয় হলুদ চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার ছাতিয়াইন, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের রতনপুর, উত্তর নোয়াপাড়া, সন্তোষপুর, ভবানীপুর, মির্জাপুর, বড়ধূলিয়া, গোয়াছনগর, সুরমা—বিস্তৃত এলাকা জুড়ে হলুদের চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছর এসব এলাকায় সীমিত পরিসরে হলুদ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এ বছর তারা বেশি পরিমাণ জায়গায় হলুদ চাষ করেছেন।
স্থানীয় হলুদ চাষি ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উল্লিখিত স্থানগুলো হলুদ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জমিগুলো অপেক্ষাকৃত উঁচু ভূমিতে হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সাধারণত পানি জমে না। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও হলুদ ক্ষেতের তেমন ক্ষতি হয় না। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় হলুদের ফলন হয়েছে ভালো।
কৃষকরা জানান, হলুদ ক্ষেতে সাধারণত কোনো পোকা আক্রমণ করে না। হলুদ গাছের পাতা তেতো হওয়ায় এতে পোকা বসে না। ফলে হলুদে কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না।
রতনপুর গ্রামের কৃষক শহীদ মিয়া জানান, এ এলাকায় তিনিই সর্বপ্রথম হলুদের চাষ শুরু করেন। গত বছর তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করেন। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে হলুদের চাষ করে আসছেন। চলতি বছরেও তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করেছেন, এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার টাকা। ফলন অনুযায়ী তিনি আশা করছেন প্রায় আড়াই লাখ টাকার বিক্রি হবে।
ইটাখোলা গ্রামের সোহেল মিয়া জানান, মসলা চাষের জন্য সরকার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও এ এলাকার কৃষকরা এখন পর্যন্ত সে ধরনের কোনো ঋণ সুবিধা পাননি। তিনি বলেন, কৃষকদের পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে তারা আরও ব্যাপক আকারে হলুদ চাষ করতে পারতেন।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজিব সরকার জানান, এ বছর মাধবপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। এই ফসলের চাষাবাদ আরও বিস্তৃত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
সানজানা