ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর বড়লেখা পৌর মার্কেটের পাশে ময়লার ভাগাড় অপসারণ

আশফাক আহমদ, বড়লেখা, মৌলভীবাজার   

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ৭ জুলাই ২০২৫

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর বড়লেখা পৌর মার্কেটের পাশে ময়লার ভাগাড় অপসারণ

ছবি: জনকণ্ঠ

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পৌর শহরের ব্যস্ততম হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় আবর্জনার দুর্গন্ধ ও জনদুর্ভোগ নিয়ে গত ৫ জুলাই "বড়লেখা পৌর মার্কেটের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী, পথচারী ও ব্যবসায়ীরা" সিরোনামে জনকন্ঠ প্রত্রিকার অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর দ্রুত ব্যবস্থানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে উপচে পড়া ময়লায় ভোগান্তিতে থাকা বাজারের বিভিন্ন অংশ পরিষ্কার করে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।

রবিবার (৬ জুলাই) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বাজারের কেন্দ্রস্থল, পৌর মার্কেট, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও মেমোরিয়াল মার্কেট সংলগ্ন এলাকা থেকে জমে থাকা আবর্জনা অপসারণ করেন। ফলে এলাকাজুড়ে দুর্গন্ধ কিছুটা কমে আসে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র উপজেলা সহ সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা অনেকদিন ধরে এই ময়লার যন্ত্রণা সহ্য করে আসছি। বাজারের ডাস্টবিনগুলোর পাশ দিয়ে গেলেই দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। খাবারের দোকানগুলো সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে কাস্টমার আসতে চায় না, আর যারা আসে তারাও অনেক সময় খাবার না নিয়েই চলে যায়। মশা-মাছির উপদ্রব এমন পর্যায়ে গেছে যে, দোকানে বসে ঠিকমতো কাজ করাও যায় না। আমরা নিজেরা বাজার পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু এই পরিমাণ ময়লা আমরা সামলাতে পারি না। শুনেছি আগে অনেকবার বাজারের দায়িত্বশীলরা পৌরসভায় অভিযোগ করেছেন, তবুও কাজ হয়নি। এবার অন্তত সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ।

ব্যবসায়ী বিলাল আহমেদ বলেন, খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা পৌর প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। সংবাদ না হলে হয়তো বিষয়টি আরও দীর্ঘ হতো। আমরা চাই, এটা যেন শুধু এক দিনের কাজ না হয়। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হোক।

পথচারী সারজান আহমদ বলেন, প্রতিদিন এখানে আসতে খুবই কষ্ট হতো। এখন অন্তত রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারছি। চার লেনের এতো সুন্দর রাস্তা আমাদের এই বড়লেখা শহরের সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি করেছে, কিন্তু এরকম কিছু জায়গায় ডাস্টবিনের হাল দেখলে সেই সৌন্দর্য অসুন্দর আর দুর্গন্ধ হারিয়ে যায়। আমরা চাই আমাদের শহর সুন্দর থাকুক।

স্থানীয় কলেজপড়ুয়া রুমেল আহমদ বলেন, প্রতিদিন স্কুল বা কলেজে যেতে হলে এই বাজারের মধ্য দিয়েই হেঁটে যেতে হয়। আগে মনে হতো এটা কোনো বাজার নয়, বরং ময়লার স্তূপের ভেতর দিয়ে পথ চলছি। ময়লার গন্ধে মাথা ঘুরে যেত, মশা, মাছির ভেন ভেন শব্দের এরকম পরিবেশে হাঁটাও যেত না ঠিকমতো। বন্ধুদের সাথে এ নিয়ে প্রায়ই কথা হতো, কেউ কেউ তো মুখে কাপড় বেঁধে চলাফেরা করতো। এখন অন্তত রাস্তা কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে, গন্ধ কমেছে। কিন্তু এটা যেন শুধু কোনো আলোচনার পরপরই না হয়, বরং প্রতিনিয়ত বাজার এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ আমরা সবাই এই শহরের মানুষ স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলাচল করা আমাদের অধিকার।

হাজীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মানিক বলেন, জনকন্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর আমরা লক্ষ্য করেছি, পৌর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মাধ্যমে বাজার এলাকার ময়লার স্তুপ অপসারণ করেছে। এ উদ্যোগের জন্য আমরা পত্রিকা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি, এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বাজারের পরিবেশ সুরক্ষায় নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। পাশাপাশি, আমরা জোর আবেদন জানাই নির্দিষ্ট একটি ময়লা ফেলার স্থান (ডাম্পিং জোন) দ্রুত নির্মাণ করা হোক, যাতে জনভোগান্তি কমে এবং সুশৃঙ্খলভাবে পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা সম্ভব হয়।

সায়মা ইসলাম

×