ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

‘আপোস না সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ’—হাফসার কণ্ঠে জেগে ওঠা ১৬ জুলাই

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ৭ জুলাই ২০২৫

‘আপোস না সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ’—হাফসার কণ্ঠে জেগে ওঠা ১৬ জুলাই

ছবি: সংগৃহীত।

“আপোস না সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ”—অগ্নিঝরা এই স্লোগানটি যেন নতুন প্রাণ পেল তানজিনা তাম্মিম হাফসার বজ্রকণ্ঠে। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়েত মৈত্রী হলে হাফসার কণ্ঠে ফুটে ওঠে রাজপথের আগুন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে দেশের রাজপথজুড়ে। আন্দোলনকারীদের ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন শক্তি হয়ে দেখা দেয় এই কণ্ঠ।

বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ—এটাই ছিল ১ জুলাই ২০২৪-এর মূল প্রতিজ্ঞা। সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া এই অহিংস আন্দোলন এক বছর পরও ইতিহাসে লেখা হয়ে আছে ছাত্র-জনতার সাহসী অভ্যুত্থান হিসেবে।

আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাতে থাকে স্লোগানও। দিন যত এগিয়েছে, দাবির ভাষা হয়েছে আরও ক্ষুরধার, আরও তীব্র। ছাত্রলীগের হামলা, প্রশাসনের নিপীড়ন, পুলিশি গুলিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের শাহাদাত—এসবই আন্দোলনে নতুন আবেগ ও আগুন ঢেলে দেয়।

সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জুলাই হাফসার মুখে যখন ধ্বনিত হয়—‘আপোস না সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ’, তা হয়ে ওঠে প্রতিরোধের প্রতীক। তাদের আরো কিছু স্লোগান—

  • “আমার খায়, আমার পরে, আমার বুকেই গুলি করে”

  • “তোর কোটা তুই নে, আমার ভাই ফিরিয়ে দে”

  • “বন্দুকের নলের সাথে ঝাঁজালো বুকের সংলাপ হয় না”

  • “লাশের ভেতর জীবন দে, নইলে গদি ছাইড়া দে”

এসব স্লোগান আন্দোলনকারীদের রক্তে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভয়ের চাদর ছিঁড়ে ছাত্র-জনতা রাস্তায় দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেয়—এই দাবি শুধু চাকরির নয়, এটি মর্যাদার, ন্যায়ের, মুক্তির।

জুলাই আন্দোলন কেবল একটি কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল না, বরং তা হয়ে উঠেছিল সামাজিক বৈষম্য, দালালি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক জাগরণ। আর সেই জাগরণে হাফসার কণ্ঠ, তার সাহসিকতা, এবং স্লোগানের আগুন ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।

নুসরাত

×