
বাংলাদেশে বর্তমানে জঙ্গিবাদের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “আপনাদের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। এ দেশে এখন আর কোনো জঙ্গি নেই।”
আজ রোববার (৬ জুলাই) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্গো ভিলেজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, “গত ১০ মাসে কেউ কোনো জঙ্গি-সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারেননি। আগে যখন জঙ্গিবাদ ছিল, তখন আপনারা তথ্য দিতেন। এখন নেই, তাই আর কেউ তথ্যও দিচ্ছেন না।”
তিনি জানান, বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে নতুন এক্সপোর্ট টার্মিনাল স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে করে কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য দ্রুত রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।
পুলিশ সদস্যদের খোঁজখবর ও রান্নাঘর পরিদর্শন
সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে উপদেষ্টা উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি পুলিশ সদস্যদের বেতন-ভাতা, আবাসন, চিকিৎসা সেবা ও খাবার সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন।
তিনি বলেন, “পুলিশ সদস্যরা আমাদের দেশের নিরাপত্তার মূল স্তম্ভ। তাঁদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন ও মানোন্নয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।”
দুপুর ১২টায় তিনি উত্তরা পূর্ব থানা পরিদর্শনে যান। সেখানে থানার ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যদের মাথায় হাত বুলিয়ে তাঁদের খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, “আমি এর আগে এসে দেখেছিলাম, এই থানায় বাথরুম সমস্যা ছিল। আজ এসে দেখি, সেই সমস্যা আর নেই। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।”
সবশেষে তিনি পুলিশ সদস্যদের রান্নাঘর পরিদর্শন করেন এবং নিজ হাতে রান্নাঘরে থাকা মাংস নেড়ে দেখেন। এ সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বলভাবে সময় কাটান তিনি।
বিদেশে আটক বাংলাদেশি ও মব জাস্টিস প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারি
মালয়েশিয়ায় আটক তিন বাংলাদেশি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি এবং মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মব জাস্টিস প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জোরালো অবস্থান জানান। তিনি বলেন, “মব জাস্টিস কোনোভাবেই কাম্য নয়। যারা এটি সংঘটন করছে, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। আমাদের দেশে আইন আছে, বিচারব্যবস্থা আছে। কেউ আইন হাতে তুলে নিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আপনারা শুধু তথ্য দিন, আমরা ব্যবস্থা নেব।”
এই সফরে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহিদুল ইসলামসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ।
তিনি আরও বলেন, “দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার স্বার্থে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
সানজানা