
ছবি: সংগৃহীত।
আকাশ জুড়ে বিষাদের কালো ছায়া, বাতাসে বয়ে যায় শোকের নিঃশব্দ হাহাকার। কারবালার প্রান্তরে ১৪০০ বছর আগে ঘটে যাওয়া সেই হৃদয়বিদারক আত্মত্যাগ আজও কাঁদায় বিশ্বমানবতাকে। আর এই ইতিহাসকে বুকভরা শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন শুধু মুসলিমরাই নন, স্মরণ করেন ভারতের কিছু হিন্দু ব্রাহ্মণও—যাদের বলা হয় হোসাইনী ব্রাহ্মণ।
কারবালার রক্তাক্ত বালুতে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রিয় নাতি ইমাম হোসাইন (র.) অন্যায়ের কাছে মাথা না নত করে শাহাদাত বরণ করেন, তখন সেই মহান আত্মত্যাগের ডাক পৌঁছায় হিন্দুস্তানের এক ব্রাহ্মণ পরিবারের কাছেও। জনশ্রুতি মতে, ভারতের রাজা সমুদ্রগুপ্ত তার সেনাপতি রেহাব সিদ্ধ এবং সাত পুত্রকে ইমাম হোসাইনের সাহায্যে পাঠিয়েছিলেন। যদিও তাঁরা পৌঁছানোর আগেই ইমাম শহীদ হন, কিন্তু ক্ষোভ ও শোকবোধে তারা নিজেরাই আত্মাহুতি দেন ফোরাত নদীর তীরে।
লোককথা বলে, এই বংশধরদের গলার কাছে আজও রয়েছে জন্মগত একটি ক্ষতচিহ্ন, যা নাকি সেই আত্মত্যাগের স্মারক। এই বংশধরদের বলা হয় হোসাইনী ব্রাহ্মণ বা মহিয়াল ব্রাহ্মণ। তারা ধর্মে হিন্দু হলেও, আশুরার দিন ইমাম হোসাইনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে অংশ নেন তাজিয়া মিছিল, রোজা পালন এবং মহররমের শোকানুষ্ঠানে।
এই হোসাইনী ব্রাহ্মণদের দেখা মেলে ভারতের লখনৌ, দিল্লি, কাশ্মীর, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং পাকিস্তানের সিন্ধ অঞ্চলে। তাদের সংখ্যা কম হলেও, ধর্মীয় সহনশীলতা ও মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন তারা।
তারা দীপাবলি উদযাপন করেন, আবার মহররমে রোজাও রাখেন। সেনাবাহিনী বা একত্র সমাজে বেড়ে ওঠা অনেকের মধ্যে ধর্মীয় বিভাজনের দেয়ালও থাকে না। হোসাইনী ব্রাহ্মণরা প্রমাণ করে দিয়েছেন, আত্মত্যাগ, সহমর্মিতা ও সত্যের প্রতি ভালোবাসা কোনো ধর্ম, জাতি বা গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=6vzwfxkSlAU&ab_channel=RtvNews
নুসরাত