
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার প্রতিশোধে মধ্যপ্রাচ্যে যখন উত্তেজনার চূড়ান্ত পরিস্থিতি, তখনও নিরব লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ফিলিস্তিনে হামলা, ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলেও লেবানন থেকে এখনো বড় ধরনের কোনো সামরিক জবাব আসেনি। প্রশ্ন উঠছে—ইরান যুদ্ধে নামার পরও কেন এখনো মিসাইল ছুটছে না লেবানন থেকে?
সমীকরণ: কেনো নিরব হিজবুল্লাহ?
বিশ্লেষকদের মতে, হিজবুল্লাহ এখনো সরাসরি যুদ্ধে জড়াচ্ছে না কয়েকটি কৌশলগত কারণে। প্রথমত, ইসরায়েলকে মোকাবিলায় ইরানের শক্তিতেই ভরসা রাখছে তারা। লেবাননের রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাশেম কাশির ভাষায়, "বর্তমানে লেবাননের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। ইরানি মিসাইলই যথেষ্ট ইসরায়েলকে মোকাবিলা করতে।"
তবে বিশ্লেষকরা এটাও বলছেন, যদি সংঘাত পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়, তাহলে পরিস্থিতি বদলাতে পারে এবং হিজবুল্লাহও সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে পারে।
ইতিহাস ও ক্লান্তি
২০২৩ সালে গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর হিজবুল্লাহ দক্ষিণ লেবানন থেকে রকেট ছোড়া শুরু করে। জবাবে ইসরায়েলও চালায় পাল্টা আক্রমণ, যার ফলে শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রায় ৪,০০০ বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধা নিহত হন। সাত মাস ধরে চলে যুদ্ধাবস্থা। বর্তমানে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি অলিখিত যুদ্ধবিরতি চলছে।
নেতৃত্বহীনতা ও ক্ষয়ক্ষতি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব বড় ধাক্কা খেয়েছে। অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা নিহত হয়েছেন, ধ্বংস হয়েছে অস্ত্রভাণ্ডারের বড় অংশ। ফলে তারা এখন সীমিত সামর্থ্যে রক্ষণাত্মক কৌশল নিচ্ছে।
ইরানের ভূমিকায় হতাশা?
হিজবুল্লাহ গঠিত হয় ১৯৮২ সালে লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময়, ইরানের প্রত্যক্ষ সহায়তায়। আদর্শিক ও কৌশলগতভাবে ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও ২০২৪ সালের ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় ইরানের সীমিত হস্তক্ষেপে প্রতিরোধ গোষ্ঠীর ভেতরে কিছুটা ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে বলেও মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
শেষ কথা
বিশ্লেষকদের একটি বড় অংশ মনে করেন, পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে এবং ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নিলে হিজবুল্লাহ হয়তো আবার সক্রিয় ভূমিকা নেবে। তবে আপাতত কৌশলগত নীরবতাই তাদের প্রধান অস্ত্র।
ইমরান