ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

প্রথম আক্রমণ করা হতে পারে ইরাকে

মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করবে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ১৮ জুন ২০২৫

মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করবে ইরান

প্রথম আক্রমণ করা হতে পারে ইরাকে

ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের চলমান সংঘাতে যদি যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা শুরু করবে ইরান। দেশটির সামরিক বাহিনীর অন্তত দুই জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং যদি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানে হামলা শুরু করে সেক্ষেত্রে ইরাকে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্রথম আক্রমণ করা হবে। পরে ধীরে ধীরে অন্যান্য ঘাঁটিগুলোও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
এ ব্যাপারে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল নিউইয়র্ক টাইমস। তারা জানিয়েছেন, ইরান যদি মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাতে চায় সেক্ষেত্রে দেশটির সেনাবাহিনীর বেশি প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। কারণ তেহরানের কাছে অল্প, মাঝারি ও দূরপাল্লার যেসব ক্ষেপণাস্ত্র আছে। তাতে খুব সহজেই ইরাক, বাহরাইন, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পরবে ইরানের সেনাবাহিনী।

কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ইরানের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে উচ্চ সতর্কতায় আছে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো। বিভিন্ন ঘাঁটিতে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৪০ হাজারেরও বেশি নতুন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে প্রায় তিন ডজন জ্বালানিবাহী বিমান পাঠিয়েছে যা মার্কিন ঘাঁটি রক্ষাকারী যুদ্ধবিমানগুলোকে সহায়তা করতে ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সম্ভাব্য হামলায় জড়িত বোমারু বিমানের পরিসর বাড়াতে ব্যবহার করা হতে পারে। ইরানের সঙ্গে তাদের সংঘাতে হস্তক্ষেপের জন্য ইসরাইল হোয়াইট হাউসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

এতে মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও বিস্তৃত যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলি অভিযানে যোগ দেয় এবং ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্ডোতে হামলা চালায় তাহলে ইরান সমর্থিত হুতি মিলিশিয়া প্রায় নিশ্চিতভাবেই লোহিত সাগরে জাহাজগুলোতে হামলা শুরু করবে। কর্মকর্তারা এসব জানিয়েছেন। তারা আরও যোগ করেছেন যে, ইরাক এবং সিরিয়ার ইরানপন্থি মিলিশিয়ারা সম্ভবত সেখানে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ করার চেষ্টা করবে।

এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান এবং সৌদি আরবসহ সমগ্র অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটিতে কমান্ডাররা আমেরিকান সেনাদের উচ্চ সতর্কতা জারি করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে। দুই ইরানি কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলের যুদ্ধে যোগ দেয় তবে দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ করবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, আমাদের শত্রুদের জানা উচিত তারা আমাদের ওপর সামরিক আক্রমণ করে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারবে না এবং ইরানের জনগণের ওপর তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে পারবে না। 
আরাগচি তার ইউরোপীয় প্রতিপক্ষদের ফোনালাপে বলেছিলেন যে, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে দোষ ইসরাইল এবং তার প্রধান সমর্থকদের ওপর পড়বে।

আরো পড়ুন  

×