ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

রাতারাতি বুড়িয়ে যাচ্ছেন? ধীরে ধীরে নয়, বয়স বাড়ে দুই ধাপে আচমকা!

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ১৮ জুন ২০২৫

রাতারাতি বুড়িয়ে যাচ্ছেন? ধীরে ধীরে নয়, বয়স বাড়ে দুই ধাপে আচমকা!

ছবি: প্রতীকী

আমরা সাধারণত বার্ধক্যকে একটি ধীর ও ক্রমাগত প্রক্রিয়া বলে মনে করি। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, জীবনের কিছু নির্দিষ্ট সময় এমন থাকে, যখন হঠাৎ করেই দ্রুত বেড়ে যায় বার্ধক্য বিশেষ করে ৪৪ ও ৬০ বছর বয়সের আশপাশে।

২০২৪ সালের আগস্টে ‘ন্যাচার এইজিং’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, বয়স ২৫ থেকে ৭৫ বছরের বহু মানুষের দেহের লক্ষ লক্ষ অণু এবং তাদের দেহে বাস করা মাইক্রোবায়োমঅর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এসব পরিবর্তন স্রেফ সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে ঘটে না। বরং জীবনের দুটি বিশেষ পর্বে হঠাৎ করেই ঘটে তীব্র জৈবিক রূপান্তর।

গবেষণাপ্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. মাইকেল স্নাইডার বলেন, ‘আমরা ধাপে ধাপে বদলাই না শুধু, কিছু সময় আছে যখন শরীর ও জৈবিক উপাদানগুলোতে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। সেই সময় দুটিমধ্যচল্লিশ এবং ষাটের দশকের শুরু।’

তিনি জানান, কোন ধরনের অণু দেখা হোক না কেনপ্রোটিন, বিপাকীয় পদার্থ বা অন্যান্যসব ক্ষেত্রেই এই দুই বয়সে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়।

স্বাস্থ্যেও এই বয়সগুলোতে পরিবর্তনের ছাপ স্পষ্ট। যেমন, হার্টের অসুস্থতার সঙ্গে জড়িত বহু অণুর উপস্থিতি উল্লিখিত দুই বয়সে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। আবার ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কিত পরিবর্তনগুলো মূলত দেখা যায় ৬০ বছর বয়সের পরপরই।

এই গবেষণার আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এটি বার্ধক্যের ধরণ নিয়ে প্রচলিত ধারণা ভেঙে দিয়েছে। আগে মনে করা হতো, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়। কিন্তু এখন বোঝা যাচ্ছে, জৈবিক বার্ধক্য আসলে একটি সমান গতির রাস্তায় হাঁটে না, বরং মাঝেমধ্যে বাঁক নেয়, গতি বাড়ায়।

গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, এই পরিবর্তনগুলো শুধু দেহের বাহ্যিক রূপ বা অনুভূতির সঙ্গে নয়, বরং ভেতরের জিনগত ও কোষীয় পরিবর্তনের সঙ্গেও গভীরভাবে যুক্ত। ভবিষ্যতে এই তথ্য ব্যবহার করে হয়তো বার্ধক্যজনিত রোগের আগাম পূর্বাভাস বা প্রতিরোধও সম্ভব হতে পারে।

তাই ৪৪ বা ৬০ বছর বয়সে হঠাৎ করেই যদি মনে হয় আপনি আগের চেয়ে অনেক বেশি বুড়িয়ে গেছেনতা কেবল মানসিক ধারণা নয়, বরং তার পেছনে রয়েছে গভীর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×