
ছবি: সংগৃহীত
চীন এবার তাদের ভবিষ্যৎ ষষ্ঠ প্রজন্মের স্টেলথ ফাইটার (অন্য নাম J-36) এবং উন্নত বিমানবাহী রণতরির ল্যান্ডিং সিস্টেম পরীক্ষায় বিপ্লব ঘটাল। পূর্ব উপকূলে ভয়াবহ সমুদ্র পরিস্থিতিতে এই পরীক্ষা চালানো হয়, যেখানে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ছয় মিটার পর্যন্ত।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বরাতে জানা গেছে, চীনের শেনইয়াং এয়ারক্রাফট ডিজাইন ইনস্টিটিউট (৬০১ ইনস্টিটিউট) এই প্রযুক্তি উন্নয়নের নেতৃত্বে রয়েছে। এটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান AVIC-এর আওতায় পরিচালিত হয়।
পূর্ব চীনের উপকূলে নৌবাহিনীর একটি গোপন পরীক্ষাগারে পরীক্ষাটি সম্পন্ন করা হয়। সেখানে সিমুলেশন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সমুদ্রের বাস্তব পরিস্থিতি যেমন, ছয় মিটার ঢেউ, দিক পরিবর্তনশীল বাতাস ও জাহাজের নড়াচড়া তৈরি করা হয়।
যে বিমানটির পরীক্ষা চলছে, সেটিকে অঘোষিতভাবে J-36 নামে ডাকা হচ্ছে। এই যুদ্ধবিমানটি চীনের নতুন প্রজন্মের Type-004 পারমাণবিক চালিত এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর ডিজাইনে থাকবে টেইললেস ফ্লাইং উইং কাঠামো, উন্নত স্টেলথ প্রযুক্তি, এবং AI সহায়ক উড্ডয়ন ব্যবস্থা।
চীন শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন (CSIC) এই প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই জেট ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপাল্ট (EMALS) ব্যবস্থা দিয়েও উড্ডয়ন করতে পারবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয়েছে নতুন ক্যারিয়ার ল্যান্ডিং সিস্টেম, যা রাফ সি কন্ডিশনেও নিরাপদ অবতরণে সহায়ক। এতে রয়েছে মোশন কম্পেনসেশন প্ল্যাটফর্ম এবং আধুনিক অ্যারেস্টিং গিয়ার, যা বিমানের অবস্থান স্থির রাখতে সাহায্য করে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে চীন তার নৌবাহিনীকে নীল জলের গভীর সমুদ্রে অভিযানের জন্য প্রস্তুত করছে। Type-004 হবে চীনের প্রথম পারমাণবিক চালিত ক্যারিয়ার, যা নতুন স্টেলথ জেটসহ ইলেকট্রনিক ও ড্রোন সাপোর্ট সিস্টেম নিয়ে আসবে।
চীনের এই উদ্যোগকে বিশ্লেষকেরা পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধির কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছেন। এতে বোঝা যায়, ভবিষ্যতের নৌ-যুদ্ধ হবে আরো স্বয়ংক্রিয়, শক্তিশালী ও প্রযুক্তিনির্ভর।
মুমু ২