
ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বজুড়ে নানা সংঘাত আর রাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝে এখনো রয়েছে এমন কিছু দেশ, যেখানে শান্তি অবিচলিত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্যা সান সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ১২টি দেশের তালিকা, যেগুলো নিরাপত্তা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অপরাধমুক্তির কারণে বিশ্ব শান্তিসূচকে শীর্ষে।
এই দেশগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে কোন যুদ্ধ বা সংঘাতের প্রভাব পড়েনি। নিরপেক্ষ নীতি, উন্নত জীবনযাত্রা এবং সামাজিক সুসংহতিই তাদের সফলতার রহস্য।
তালিকার কিছু প্রধান দেশ হলো—
১. আইসল্যান্ড
বিশ্ব শান্তিসূচকে টানা প্রথম স্থান অধিকার করা এই দেশটিতে নেই কোনো সেনাবাহিনী। অপরাধের হার অত্যন্ত কম এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়া এই স্থল একেবারে স্বর্গরাজ্য।
২. সুইজারল্যান্ড
দুই শতাব্দী ধরে যুদ্ধবিরতি বজায় রেখে নিরপেক্ষতার প্রতীক। উন্নত স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সুইজারল্যান্ডকে সত্যিকার অর্থে নিরাপদ দেশ করেছে।
৩. নিউজিল্যান্ড
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব মিশেল, যেখানে শান্তিপূর্ণ সমাজ, উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে। সবুজ পাহাড় আর স্বচ্ছ লেকের মাঝে বসবাসের স্বপ্ন যারা দেখেন, তাদের জন্য আদর্শ।
৪. কানাডা
বিশ্বের অন্যতম স্থিতিশীল দেশ। অপরাধের হার কম, রাজনৈতিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ। অভিবাসীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি ও বিস্তৃত প্রাকৃতিক সম্পদ কানাডাকে নিরাপত্তার প্রতীক করেছে।
৫. ফিনল্যান্ড
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় বিশ্বে শীর্ষে। অপরাধের হার কম এবং আধুনিক নগর আর শান্তিপূর্ণ গ্রামাঞ্চলের মিশ্রণ জীবনের গুণগত মান বাড়িয়েছে।
৬. নরওয়ে
অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক সম্পদে ধনী দেশ। মানবাধিকার, সামাজিক সমতা ও শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা এটিকে নিরাপদ করেছে।
৭. আয়ারল্যান্ড
নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে আধুনিক অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সমন্বয়। অপরাধের হার কম, নাগরিক সুবিধা উন্নত।
৮. ডেনমার্ক
শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের দেশ। সমুদ্রতটের নিকটে নিরাপদ শহর ও সুখী জীবনযাত্রার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
৯. পর্তুগাল
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অপরাধমুক্তির কারণে ইউরোপের অন্যতম নিরাপদ দেশ। উষ্ণ আবহাওয়া, সুন্দর সমুদ্রতট ও সুস্বাদু খাবার জনপ্রিয়।
১০. সিঙ্গাপুর
সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক নগর পরিকল্পনা সিঙ্গাপুরকে নিরাপত্তার শহর বানিয়েছে।
১১. অস্ট্রিয়া
সামরিক সংঘাত থেকে দূরে, উন্নত সামাজিক সুবিধা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের জন্য পর্যটকদের প্রিয়।
১২. মালটা
ছোট্ট দ্বীপ রাষ্ট্র হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অপরাধ থেকে মুক্ত। রৌদ্রজল, নীল সমুদ্র আর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ মালটাকে অনন্য করেছে।
কেন এই দেশগুলো এত শান্তিপূর্ণ?
- নিরপেক্ষ নীতি: আন্তর্জাতিক সংঘাতে জড়ানোর পরিবর্তে নিরপেক্ষ অবস্থান।
- সামাজিক সুরক্ষা: শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন।
- উন্নত জীবনযাত্রা: স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশের উচ্চ মান।
- কম অপরাধ: অপরাধ ও সহিংসতা খুবই কম, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত।
এই দেশগুলো শান্তির এক আলোকবর্তিকা হিসেবে বিশ্বকে দেখায়, যে উন্নত জীবন আর নিরাপত্তা অর্জন করা সম্ভব, যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠিত থাকে।
নুসরাত