
ছবি: সংগৃহীত।
ইসলামের ইতিহাসে এমন এক অভিশপ্ত নারীর নাম বারবার উঠে আসে, যাকে ঘৃণায় স্মরণ করে যুগে যুগে মুসলিম বিশ্ব। তার পাপ এত গভীর, এত ভয়ানক যে অনেক ইসলামি ব্যাখ্যানে তাকে ‘জাহান্নামের মা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বলা হয়, এমনকি ইবলিসও তার চক্রান্ত ও ঘৃণার সামনে ভয়ে পিছিয়ে থাকত।
তিনি ছিলেন মক্কার কুরাইশ বংশের উমাইয়া গোত্রের নারী, নাম উম্মে জামিল—অর্থ ‘সৌন্দর্যের জননী’। বাহ্যিক সৌন্দর্য, রাজকীয় মর্যাদা, বিপুল সম্পদ ও সামাজিক ক্ষমতা—সবই ছিল তার হাতে। কিন্তু এই ঐশ্বর্যের আড়ালে লুকিয়ে ছিল ঘৃণা, হিংসা, অহংকার আর ইসলামবিরোধী ভয়ানক ষড়যন্ত্র।
তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা আবু লাহাবের স্ত্রী। যখন নবী করিম (সা.) আল্লাহর বার্তা প্রচার শুরু করলেন, তখন মক্কায় আলো ছড়াতে শুরু করে তাওহীদের বাণী। কিন্তু সেই আলোতে চোখ ধাধিয়ে যায় যারা অন্ধকারে অভ্যস্ত, তাদেরই একজন ছিলেন উম্মে জামিল।
তিনি গুজব রটাতেন নবীজি (সা.)-কে নিয়ে, অপবাদ দিতেন উম্মুল মু’মিনীন খাদিজা (রা.)-কেও। কেবল কুৎসা রটনাই নয়, ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচার ও প্ররোচনায় অর্থ ব্যয় করতেন। সাহাবিদের ভয় দেখাতেন, প্রলোভন দিতেন, এমনকি রাসূল (সা.)-কে হত্যার পরিকল্পনাতেও সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন স্বামী আবু লাহাবের সঙ্গে।
এই নারীর শত্রুতা ও অপকর্ম এতটাই সীমাহীন ছিল যে আল্লাহ তাআলা কোরআনের একটি পূর্ণ সূরা নাজিল করেছেন তাদের বিরুদ্ধে—সূরা আল-লাহাব। সেখানে বলা হয়: "সে (আবু লাহাব) অচিরেই আগুনে দগ্ধ হবে। আর তার স্ত্রী – গলায় খেজুর বৃক্ষের রশি বেঁধে কাঠ বহন করবে।" (সূরা আল-লাহাব, আয়াত ৩-৫)
এই সূরা কেবল একটি ঐতিহাসিক আখ্যান নয়, বরং দুনিয়ার প্রতিটি যুগে যারা ইসলামকে নির্মূল করতে চায়, তাদের জন্য এক স্থায়ী সতর্কবার্তা।
আজ যারা ডলার-পাউন্ড ঢেলে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তারা যেন জেনে রাখে—ইতিহাস সাক্ষী, উম্মে জামিলের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা যেমন ধ্বংস হয়েছে, তেমনিভাবে তারাও বিলীন হবে ইতিহাসের অন্ধকার পাতায়। ইসলাম কখনো মুছে যাবে না, বরং প্রতিদিন তা নতুন শক্তি নিয়ে পৃথিবীর বুকে জেগে উঠবে।
নুসরাত