ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

জুলাই ও আগস্টে যে ৩ দিন দ্রুতগতিতে ঘুরবে পৃথিবী!

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ৩ জুলাই ২০২৫

জুলাই ও আগস্টে যে ৩ দিন দ্রুতগতিতে ঘুরবে পৃথিবী!

ছবি: প্রতীকী

চলতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি সামান্য বাড়বে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে ওই সময়ে দিনের দৈর্ঘ্য অল্প হলেও কমে যেতে পারে। সময় ও ক্যালেন্ডার বিষয়ক ওয়েবসাইট timeanddate.com এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৯ জুলাই, ২২ জুলাই এবং ৫ আগস্ট হবে বছরের সবচেয়ে ছোট দিন।

তবে দিনের দৈর্ঘ্য কমার বিষয়টি খুব সূক্ষ্মমিলিসেকেন্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, আগামী ৫ আগস্টের দিনটি গড় দৈর্ঘ্যের তুলনায় প্রায় ১.৫১ মিলিসেকেন্ড কম দীর্ঘ হবে বলে বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন।

প্রসঙ্গত, সাধারণত পৃথিবী সূর্যকে একবার ঘিরে ঘোরার সময় নিজ অক্ষে প্রায় ৩৬৫ বার আবর্তিত হয়, যা এক বছরের দিনের সংখ্যা। তবে ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, সব সময় এমন ছিল না। বিভিন্ন গাণিতিক হিসাব অনুযায়ী অতীতে পৃথিবী সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে ৪৯০ থেকে ৩৭২ দিন পর্যন্ত সময় লাগত।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর এই ঘূর্ণন গতি বৃদ্ধির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে রয়েছেপৃথিবীর অভ্যন্তরের কোর বা কেন্দ্রের গঠন ও গতিবিধি, গলতে থাকা হিমবাহের কারণে ভরের পুনর্বণ্টন এবং এল নিনো ও লা নিনার মতো জলবায়ুবিষয়ক প্রাকৃতিক ঘটনা, যা পৃথিবীর ভরের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে। এমনকি চাঁদের অবস্থানও এ পরিবর্তনের জন্য দায়ী হতে পারে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই তিনটি সম্ভাব্য তারিখে চাঁদ পৃথিবীর নিরক্ষরেখা থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থান করবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজির সময় ও ফ্রিকোয়েন্সি বিভাগের পদার্থবিদ জুডাহ লেভিন ২০২১ সালে ডিসকভার ম্যাগাজিনকে বলেছিলেন, ‘লিপ সেকেন্ডের প্রয়োজন না হওয়াটা আগে কেউ কল্পনাও করেনি। সবাই ধরেই নিয়েছিল পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি ধীরে ধীরে কমবে এবং ভবিষ্যতেও লিপ সেকেন্ড প্রয়োজন হবে। কিন্তু বাস্তবে যা দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত বিস্ময়কর।’

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যদি এই ঘূর্ণন গতি এভাবেই বাড়তে থাকে, তবে আগামী ২০২৯ সালের মধ্যে প্রথমবারের মতো সময় গণনায় এক সেকেন্ড বাদ দিতে হতে পারে, যা হবে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

রাশিয়ার মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির পৃথিবীর ঘূর্ণন বিশ্লেষক লিওনিদ জোতোভ timeanddate.com-কে বলেন, ‘কেউই এমন কিছু আশা করেনি। ঘূর্ণন গতি বৃদ্ধির কারণ এখনও অজানা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশিরভাগ বিজ্ঞানীর মতে, এটি সম্ভবত পৃথিবীর অভ্যন্তরেই কোনো পরিবর্তনের ফল। সাগর ও বায়ুমণ্ডলের গাণিতিক মডেলগুলো এই আকস্মিক পরিবর্তন ব্যাখ্যা করতে পারছে না।’

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×