ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলার ৪ আসনে স্বপ্ন বুনছে যারা

মো. বেল্লাল নাফিজ, ভোলা

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ৩ জুলাই ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলার ৪ আসনে স্বপ্ন বুনছে যারা

দ্বীপ জেলা ভোলাকে বলা হয়ে থাকে দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতির চারণভূমি। বরিশাল বিভাগের ২১টি আসনের মধ্যে ভোলা জেলায় রয়েছে ৪টি। ভোলা-১ আসন (ভোলা সদর), ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন), ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) ও ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা)। প্রায় সব আসনই হেভিওয়েট প্রার্থীদের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা শুরু করেছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও মাঠ গোছানোর কাজ।

বিএনপি থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী চারটি আসনেই মনোনীত। এছাড়া, জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং অন্যান্য ইসলামি দলগুলোও ধীরে ধীরে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ভোটারদের আলোচনায় বলা হচ্ছে— আসল লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের মধ্যে।

ভোলা-১ (সদর)

জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে পরিচিত ভোলা-১। এখানে আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হায়দার আলী লেলিন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামবেন জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে প্রার্থী হচ্ছেন জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি ওবায়েদ বিন মোস্তফা।

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক শামান্তা শারমিন জানান, “এখনও চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য সাম্য, ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করা।”

আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, “ভোলা ও ঢাকায় দুটি আসনেই নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা এককভাবে নাকি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করব, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।”

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী গোলাম নবী আলমগীর বলেন, “জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা নিয়ে আসনটি বিএনপিকে উপহার দিতে পারব। ভোলার তৃণমূল বিএনপি এক ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাকে বিজয়ী করবে ইনশাআল্লাহ।”

ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন)

এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী চারজনের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিম। তিনি বলেন, “দল যদি আমাকে মনোনয়ন না দেয়, আমার ছেলে ব্যারিস্টার মারুফ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।”

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামছেন মাওলানা ফজলুল করিম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এনসিপি এখানকার প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি।

ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন)

এ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট নেতা মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ (অব.) একক প্রার্থী। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে লড়বেন নিজামুল হক নাঈম, আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মুসলেমউদ্দীন আহমেদ।

মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ একাধিকবার সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে এ আসনে বিএনপির অন্য কোনো প্রার্থী দেখা যাচ্ছে না।

ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা)

বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনজন— সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হচ্ছেন অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা কামাল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাও. মো. আব্বাস উদ্দিনও ভোটের মাঠে সক্রিয়।

নাজিম উদ্দীন আলম বলেন, “রাজপথের পরিশ্রম বৃথা যেতে পারে না। বিএনপির চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দিয়ে মূল্যায়ন করবেন।”

মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, “ভোলা-৪ আসনের জনগণের সার্বিক কল্যাণে আমার বহু বাস্তবমুখী পরিকল্পনা রয়েছে।”

মিমিয়া

×