
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
শেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় বস্তায় আদা চাষের প্রবণতা বেড়েছে। জমির অভাবে যে-সব কৃষক উৎপাদন থেকে দূরে ছিলেন, তারাও এখন বাড়ির উঠান, ছাদ কিংবা কোনার ফাঁকা জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ করছেন। এতে খরচ কম, পরিচর্যা সহজ এবং লাভজনক হওয়ায় এই চাষ পদ্ধতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
জেলার শ্রীবরদী, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় বস্তাভিত্তিক আদা চাষ করছে শতাধিক কৃষক। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে প্রায় দুই শতাধিক কৃষক এ পদ্ধতিতে চাষে নেমেছে।
শ্রীবরদী উপজেলার আব্দুস সাত্তার বলেন, প্রথম বছর আমি ২০টি বস্তায় আদা লাগাই। খরচ হয় প্রায় ছয় হাজার টাকা। ফলন পাই ভালোভাবে, সব বিক্রি করে পাই প্রায় ছাব্বিশ হাজার টাকা। এবার ৫০ বস্তা নিয়ে কাজ করছি, আশা করছি লাভ আরও বেশি হবে।
কৃষক আজাদ মিয়া বলেন, উঠান পড়ে ছিল ফাঁকা, সেখানে ৫০টি বস্তায় আদা লাগিয়েছি। পরিচর্যা করতে খুব একটা কষ্ট হয় না। সার পানি ঠিক রাখলেই ভালো ফলন সহ ভালো দাম পাওয়া যায়।
ঝিনাইগাতির শ্রাবণী আক্তার বলেন আমি ঘরের পেছনের ফাঁকা জায়গায় ৩৫টা বস্তায় আদা লাগিয়েছি। নিজ হাতে যত্ন নিচ্ছি। এতে কিছুটা আয় হয়, আবার পরিবারের কাজে সহায়তাও হয়।
শেরপুরে বস্তায় আদা চাষ এখন পরীক্ষামূলক নয়, বরং এটি কৃষির একটি নতুন সফল মডেল হয়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের কারিগরি সহায়তা ও কৃষকদের উদ্যম এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতে এটি কৃষক পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা এবং নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন বলেন, বস্তায় আদা চাষ একটি আধুনিক ও লাভজনক চাষ পদ্ধতি। অল্প জায়গায় বেশি উৎপাদনের সুবিধা থাকায় এটি এখন কৃষকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং অনেকেই সফলভাবে চাষ করে উৎসাহিত হচ্ছেন।
মিরাজ খান