
ছবি: সংগৃহীত
লিভার আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা রক্ত পরিশোধন, চর্বি হজম এবং টক্সিন অপসারণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। সঠিক খাবার খেলে এই অঙ্গটি আরও সুস্থ ও সক্রিয় রাখা যায়। নিচে এমন ছয়টি প্রাকৃতিক খাবারের কথা বলা হলো, যা লিভারকে সুস্থ রাখতে সহায়ক:
১. রসুন: রসুনে রয়েছে সালফার যৌগ, যা লিভারে থাকা এনজাইমকে সক্রিয় করে এবং বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা সেলেনিয়াম নামক খনিজ উপাদান লিভারের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ায়। নিয়মিত রসুন খেলে চর্বি জমা প্রতিরোধ এবং প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে লিভার ফাইব্রোসিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
২. শাকসবজি: স্পিনাচ, কেল, কলার্ড গ্রিনস এবং আরুগুলা জাতীয় পাতাযুক্ত শাকসবজিতে ক্লোরোফিল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে, যা টক্সিন নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে। এগুলো বাইল (পিত্তরস) উৎপাদন বাড়ায়, যা লিভার বর্জ্য দূর করতে ব্যবহার করে। এছাড়াও এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও উদ্ভিজ্জ লৌহ দেহকোষকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে।
৩. হলুদ: হলুদের সক্রিয় উপাদান কারকিউমিনে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ। এটি বাইল উৎপাদন বাড়ায় এবং চর্বি ভাঙতে সহায়তা করে। এছাড়াও লিভার কোষ পুনর্জন্মেও ভূমিকা রাখে। নিয়মিত হলুদ সেবনে চর্বিযুক্ত লিভার, অ্যালকোহলের প্রভাব এবং অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি কমানো সম্ভব।
৪. বিটরুট: বিটে আছে বেটাইন, নাইট্রেট এবং ফাইবার, যা লিভার ডিটক্সিফিকেশন ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি বিষাক্ত উপাদান ভাঙার জন্য এনজাইম উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্ত বিশুদ্ধ করে। বিটরুট রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যা লিভারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫. চর্বিযুক্ত মাছ: স্যামন, ম্যাকারেল ও সার্ডিন জাতীয় চর্বিযুক্ত মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা লিভারে চর্বি জমা কমায়, প্রদাহ প্রতিরোধ করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। এটি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ প্রতিরোধে কার্যকর। সপ্তাহে ২-৩ বার চর্বিযুক্ত মাছ খেলে লিভার কোষ রক্ষা পায় এবং হার্ট ও লিভার দুই-ই সুস্থ থাকে।
৬. সবুজ চা: সবুজ চায়ে রয়েছে ক্যাটেকিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা লিভারের চর্বি কমায় এবং কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি লিভার এনজাইমের মাত্রা উন্নত করে এবং বিশেষ করে চর্বিযুক্ত লিভারের ক্ষেত্রে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। সবুজ চা মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক, যা লিভার সুস্থ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শহীদ