ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

এই ৫টি পরিচিত ওষুধ হঠাৎ করেই হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে

প্রকাশিত: ১১:৪২, ৪ জুলাই ২০২৫

এই ৫টি পরিচিত ওষুধ হঠাৎ করেই হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে

ছ‌বি: সংগৃহীত

ওষুধ আমাদের অসুস্থতা সারাতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি তা একদিকে আরাম দেয় আর অন্যদিকে চুপিচুপি বড় ক্ষতি করে, তাহলে কি সেই ওষুধকে সত্যিকারের নিরাপদ বলা যায়?

অনেক পরিচিত ওষুধ আছে যেগুলো আমরা বছরের পর বছর ধরে ব্যবহার করে আসছি, মাথাব্যথা, সর্দি বা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আরাম পেতে। কিন্তু কার্ডিওলজিস্ট ড. দিমিত্রি ইয়ারানভ সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে জানিয়েছেন, এমন কিছু বহুল ব্যবহৃত ওষুধ রয়েছে, যেগুলো সতর্কতা ছাড়াই হৃদযন্ত্রের বড় ক্ষতি করতে পারে।

তিনি বলেন, “আমি একজন কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে প্রায়ই দেখি অনেক সাধারণ ওষুধ নীরবে হৃদযন্ত্রের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে।” ড. ইয়ারানভ সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে অনুরোধ করেছেন।

চলুন জেনে নিই সেই পাঁচটি ওষুধ সম্পর্কে যেগুলো নিয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি:

১. এনএসএআইডি (যেমন: আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রক্সেন) 

মাথাব্যথা, গাঁটে ব্যথা কিংবা ইনফ্লামেশন কমাতে আমরা প্রায়শই আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রক্সেনের মতো ওষুধ ব্যবহার করি। কিন্তু এই ওষুধগুলো নিয়মিত বা বেশি মাত্রায় খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, শরীরে পানি জমতে পারে এবং এমনকি হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হয়। বিশেষ করে যাঁদের আগে থেকেই হার্টের সমস্যা আছে, তাঁদের এই ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

২. কিছু কেমোথেরাপি ওষুধ (যেমন: ডক্সোরুবিসিন, ট্রাস্টুজুম্যাব) 

ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হৃদপিণ্ডের পেশি দুর্বল করে ফেলতে পারে। এর ফলে হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বাড়ে। এজন্য অনেক ক্যানসার রোগীর নিয়মিত হার্ট চেকআপ করা হয় চিকিৎসার সময় ও পরে।

৩. উত্তেজক ওষুধ (যেমন: অ্যামফেটামিন, এডিএইচডি’র ওষুধ) 

এ ধরনের ওষুধ ADHD বা নারকোলেপসি রোগে ব্যবহৃত হয়। এগুলো হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিতে পারে, রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে হার্টের ছন্দের গন্ডগোল বা হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত ঘটাতে পারে। বিশেষ করে যদি রোগীর আগে থেকেই হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে।

৪. পুরনো প্রজন্মের ডায়াবেটিস ওষুধ (যেমন: রোসিগ্লিটাজোন) 

আগের কিছু ডায়াবেটিসের ওষুধ রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনলেও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। বর্তমান সময়ে হৃদপিণ্ডের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ ও আধুনিক ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে, তাই এমন ওষুধ ব্যবহার করলে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প খুঁজে নেওয়া ভালো।

৫. ডিকনজেস্ট্যান্ট (যেমন: সুডোইফেড্রিন) 

ঠান্ডা-সর্দির ওষুধে ব্যবহৃত এই উপাদানটি নাক বন্ধ থাকার উপশম দিতে রক্তনালী সংকুচিত করে। কিন্তু একইসঙ্গে এটি রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং হার্টবিটের স্বাভাবিক ছন্দের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ থাকে, তাহলে ডিকনজেস্ট্যান্ট ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের অনুমতি নেওয়া উচিত।

ওষুধ গ্রহণের আগে সচেতন থাকা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ অনেক সময় যেটা শরীরের এক সমস্যার সমাধান দিচ্ছে, সেটা অন্য এক স্থানে আরও বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে.

×