
ছবি: সংগৃহীত
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে নিজের খাবার নিয়ে সচেতন হতে হয়। তবে তার মানে এই নয় যে, রাতারাতি পুরো ডায়েট পাল্টে ফেলতে হবে। দৈনন্দিন খাবারে ছোট ছোট কিছু পরিবর্তনই আপনার জন্য হতে পারে বড় সুফলদায়ক। সকালের নাশতা থেকে শুরু করে দুপুর, রাতের খাবার এমনকি স্ন্যাকস— প্রতিদিনের খাবারে ব্যবহৃত উপকরণগুলো ঠিকভাবে বাছাই করলেই শরীরের সামগ্রিক পুষ্টি উন্নত হয়। দেখতে ছোট মনে হলেও, এই পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে আপনার দেহে পুষ্টির ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ভারতের দিল্লির সি কে বিরলা হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট দীপালি শর্মা ৫টি সহজ উপাদান পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন, যা আপনার দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসকে আরও স্বাস্থ্যকর করে তুলবে:
১. টক দই বা ভারী ডিপের বদলে নিন গ্রিক দই বা ঘরের তৈরি দইয়ের ডিপ
গ্রিক দইতে থাকে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও প্রোবায়োটিকস।
এটি হজমে সাহায্য করে, পেটের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট ছাড়াই মসৃণ ও ক্রিমি স্বাদ দেয়।
এই পরিবর্তন ক্যালোরি কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে উপকারী ভালো ব্যাকটেরিয়া যোগ করে।
২. সাদা ভাতের বদলে খান বাদামী ভাত বা সবজি-ভিত্তিক ভাত
বাদামী ভাত হচ্ছে সম্পূর্ণ শস্য, এতে থাকে উচ্চমাত্রার আঁশ, জটিল কার্বোহাইড্রেট, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন বি।
সাদা ভাতে থাকে সহজ কার্বোহাইড্রেট ও খুব কম পুষ্টি উপাদান।
বাদামী ভাত রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং বেশি সময় পেট ভরা রাখে।
৩. ভাজা স্ন্যাকসের বদলে খান ফল, বাদাম ও বীজজাত খাবার
চিপস বা ভাজা নিমকির বদলে বেছে নিন কাঠবাদাম, আখরোট, চিয়া বীজ, ফ্ল্যাক্সসিড ও মৌসুমি ফল।
এসব খাবারে থাকে স্বাস্থ্যকর চর্বি (ওমেগা-৩), অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই, ম্যাগনেশিয়াম ও আঁশ, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, প্রদাহ কমায় এবং দীর্ঘস্থায়ী শক্তি জোগায়।
৪. সাদা পাউরুটির বদলে খান হোল গ্রেইন, মাল্টিগ্রেইন বা মিলেট ব্রেড
হোল গ্রেইন বা মিলেট ব্রেডে থাকে সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেশিয়াম ও আঁশ।
এগুলো হজমে সাহায্য করে, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং সাদা পাউরুটির তুলনায় অনেক বেশি সময় পেট ভরা রাখে।
৫. মায়োনিজ বা ক্রিমযুক্ত স্প্রেডের বদলে ব্যবহার করুন অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে থাকে স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও আঁশ।
এটি হৃদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্য রক্ষা করে, রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এবং দোকানে কেনা স্প্রেডের ট্রান্সফ্যাট ছাড়াই খাবারের পুষ্টি বাড়ায়।
প্যাকেটজাত বা টেট্রা প্যাক জুস থেকে দূরে থাকতে হবে। এর বদলে পুরো মৌসুমি ফল ও সবজি খান।
পূর্ণ ফলে থাকে আঁশ, ভিটামিন এ, সি ও পটাশিয়াম, যা হজম নিয়ন্ত্রণে রাখে ও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে।
রান্নার জন্য ভাজার বদলে বেছে নিন স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি—স্টিমিং, স্যুটেইং, গ্রিলিং বা বেকিং। এতে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে ও ক্ষতিকর চর্বি অনেকটাই কমে।
আবির