ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

৪ বছর যাবত ভাঙা রাস্তায় যাতায়াতে দুর্ভোগ

রফিকুল ইসলাম আধার, শেরপুর

প্রকাশিত: ১৮:০১, ৩ জুলাই ২০২৫

৪ বছর যাবত ভাঙা রাস্তায় যাতায়াতে দুর্ভোগ

ছবি: জনকণ্ঠ

শেরপুর জেলা সদর থেকে নালিতাবাড়ী ভায়া গাজীরখামার সড়কটির বেহাল দশার কারণে গত ৪ বছর ধরে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। নালিতাবাড়ী উপজেলাসহ আশেপাশের ইউনিয়নগুলোতে যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি এখন যেন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা রাস্তাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এলজিইডি বলছে, রাস্তাটি সংস্কারে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন হয়ে এলেই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। 


জানা যায়, প্রতিদিন জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি দিয়ে দুটি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ জেলা সদর ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় যাতায়াত করেন। রাস্তাটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে তা এখন যেন জনদুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়কটি প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্তকরণ ও  সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলে ৪ বছর পর ২০২০ সালে খুড়িয়ে খুড়িয়ে শেষ হয় সংস্কার কাজ। কিন্তু এরপর এক বছরও টেকেনি ওই সড়কটির স্থায়িত্ব।

এ সড়কটির নালিতাবাড়ী অংশ মোটামুটি ভালো থাকলেও শেরপুর সদরের পুরো অংশেরই বেহাল দশা। কোথাও খানাখন্দ, আবার কোথাও দেড় থেকে দুই ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ভাঙা রাস্তায় চলাচলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন, অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। শুকনো মৌসুমে যা-ও একটু চলাচল করা যায়, বর্ষা এলে তা রূপ নেয় চরম ভোগান্তিতে।


সরেজমিনে সদর উপজেলার গাজীরখামার বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাকা সড়কের কোন চিহ্নই নেই। পুরো সড়ক ভেঙে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বাজারের লোকজন পুরনো ইট-সুরকি ফেলে সড়কটি চলাচলের যোগ্য করে তোলার চেষ্টা করছেন। এছাড়া কিছুদূর পরপরই রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। গত ৪ বছর ধরে ওই ভাঙা-চোরা সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগী, আর সাধারণ যাত্রীরা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের। ওই সড়কপথে যাতায়াতকালে স্থানীয় স্কুলছাত্র সবুজ মিয়া বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে গাজীরখামার বাজার দিয়ে হেঁটে চলাই কঠিন। কখন জানি কোন গাড়ি উল্টে শরীরের উপরে পড়ে যায় তার কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। এই সড়কটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।’ একই সময় কথা হয় মোটরসাইকেলআরোহী জেলা জামায়াতের আমীর ও পার্শ্ববর্তী বাজিতখিলা ইউনিয়নের অধিবাসী মাওলানা হাফিজুর রহমানের সাথে।

তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি অনেকদিন থেকেই ভাঙাচোরা। বিশেষ করে বাজার এলাকায় এমন গর্ত সৃষ্টি হয়েছে গাড়ি-ঘোড়া তো দূরের কথা, মানুষ পারাপারই কঠিন। এতে অনেক সময়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে যানবাহন ও মানুষজন। এটি দ্রুতই সংস্কার হওয়া দরকার।’ স্থানীয় বাসিন্দা ফজর আলী বলেন, ‘এই রাস্তাটা ঠিক করতে সময় লাগছে ৪ বছর। অথচ এক বছর যাইতে না যাইতেই আবার ভেঙে গেছে। এখন আর ঠিক করার নাম নাই। আমাদের চলাফেরা করতে খুবই অসুবিধা হইতেছে।’ একই কথা জানান স্থানীয় পলাশিয়া গ্রামের মো. আরিফ হোসেন, বাবর আলী, মো. আল-আমিনসহ অনেকেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘব করা হবে-এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।


এ ব্যাপারে শেরপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওই সড়কটি সংস্কারে একটি বড় প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার কামারেরচর থেকে গাজীরখামার, নালিতাবাড়ী হয়ে হালুয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে এলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাজীরখামার বাজারসহ যেসব জায়গায় বড় খানা-খন্দ রয়েছে, সেগুলো আপাতত জরুরিভিত্তিতে মেরামত করে দেওয়া হবে।

সাব্বির

×