
ছবি: সংগৃহীত
ভিটামিন ডি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন। এটি হাড় ও দাঁতের সুস্থতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে একবার খেলে এটি কতদিন শরীরে থাকে, তা জানাও সমান জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ডি, বিশেষ করে ডি-৩, শরীরে শেষ ডোজ নেওয়ার পর কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত থেকে যেতে পারে। এটি সহজে শরীর থেকে বের হয়ে যায় না, বরং চর্বি টিস্যুতে জমা থাকে এবং প্রয়োজনমতো ব্যবহৃত হয়। একক ডোজ খেলেও তার প্রভাব কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে।
যদি কেউ নিয়মিত ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন, তবে তা ধীরে ধীরে শরীরে জমা হয়ে দীর্ঘমেয়াদে সক্রিয় থাকে। তবে, গ্রহণ বন্ধ করলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই স্তর হ্রাস পেতে শুরু করে। এটি নির্ভর করে কতটুকু গ্রহণ করা হয়েছে, শরীরে কতটা জমা আছে এবং অন্যান্য উৎস যেমন রোদ বা খাদ্য থেকে কতটা পাওয়া যাচ্ছে তার ওপর।
ভিটামিন ডি কীভাবে কাজ করে?
সূর্যের আলো, খাবার বা সাপ্লিমেন্ট থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন ডি সরাসরি সক্রিয় হয় না। যেহেতু এটি ফ্যাট-সোল্যুবল, তাই এটি শরীরের চর্বিতে জমা থাকে এবং পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলোর মতো দ্রুত শরীর থেকে বেরিয়ে যায় না।
কোন ধরনের ডি বেশি কার্যকর?
ভিটামিন ডি-এর দুটি ধরন রয়েছে: ডি-২ (এরগোক্যালসিফেরল) এবং ডি-৩ (কোলেক্যালসিফেরল)। উভয় প্রকারই শরীরে ভিটামিন ডি-এর স্তর বাড়ায়, তবে ডি-৩ শরীরে বেশি সময় ধরে থাকে এবং অধিক কার্যকর।
ভিটামিন ডি বেশি হলে কী হয়?
যেহেতু এটি শরীরে জমে থাকতে পারে, তাই অতিরিক্ত মাত্রায় সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ভিটামিন ডি টক্সিসিটি হলে রক্তে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমে গিয়ে দেখা দিতে পারে নানা উপসর্গ:
- ক্ষুধামান্দ্য
- বমি, বমিভাব
- দুর্বলতা
- বিভ্রান্তি
- কিডনির জটিলতা, এমনকি পাথর
ভিটামিন ডি কত দ্রুত কার্যকর হয়?
ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে।
কোন কোন কারণে ভিটামিন ডি শরীরে কম থাকে?
- শরীরে অতিরিক্ত চর্বি থাকলে ভিটামিন ডি জমে যায়, কিন্তু সহজে মুক্ত হয় না
- লিভার বা কিডনির সমস্যা
- ফ্যাট শোষণজনিত রোগ যেমন ক্রোন’স ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস
- নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ
- পর্যাপ্ত রোদ না পাওয়া
- অল্প ডোজ গ্রহণ
আপনি যদি নিশ্চিত না হন যে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত আছে কি না, তাহলে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত ভিটামিন ডি নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
মুমু ২