ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

খাবার খেলেই হঠাৎ ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা? সাবধান,হতে পারে ‘সুগার স্পাইক’

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ১২ জুলাই ২০২৫

খাবার খেলেই হঠাৎ ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা? সাবধান,হতে পারে ‘সুগার স্পাইক’

ছবি: সংগৃহীত

রক্তে হঠাৎ করে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া মানেই সুগার স্পাইক (Sugar Spike)। এটি সাধারণত বেশি চিনি বা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খাওয়ার পরপরই ঘটে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এমন পরিস্থিতি টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

সুগার স্পাইক কীভাবে হয়?

খাবার গ্রহণের পর আমাদের শরীর গ্লুকোজ তৈরি করে, যা রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে। স্বাভাবিক অবস্থায় ইনসুলিন হরমোন এই গ্লুকোজকে কোষে প্রবেশ করিয়ে শক্তিতে পরিণত করে। কিন্তু যখন আমরা হাই গ্লাইসেমিক খাবার খাই—যেমন মিষ্টি, সাদা ভাত, মিষ্টি ফল ইত্যাদি—তখন অতিরিক্ত গ্লুকোজ রক্তে জমা হয়ে যায়। ইনসুলিন সামলাতে না পারলে রক্তে হঠাৎ শর্করা বেড়ে যায়, যাকে সুগার স্পাইক বলা হয়।

সুগার স্পাইকের লক্ষণগুলো কী?

সাধারণত খাবারের ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যেই এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে:

1. হঠাৎ ক্লান্তি বা দুর্বল লাগা

2. মাথা ঘোরা

3. অতিরিক্ত ঘাম হওয়া

4. মনোযোগে ঘাটতি

5. ঘন ঘন প্রস্রাব

6. তীব্র পিপাসা


বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: কীভাবে রোধ করবেন সুগার স্পাইক?

বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. এস. এ. মল্লিক সুগার স্পাইক প্রতিরোধে ১০টি কার্যকর পরামর্শ দিয়েছেন—

1. কার্বোহাইড্রেট নিয়ন্ত্রণ করুন: আম, কাঁঠাল, কলা, লিচুর মতো মিষ্টি ফল কম খান এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খান।


2. রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলুন: সাদা ভাত, ময়দার তৈরি খাবার, বেকড পণ্য কম খান।


3. চিনি গ্রহণ কমান: বিশেষ করে কোমল পানীয়, মিষ্টি, চকোলেট বর্জন করুন।


4. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ব্যায়াম সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।


5. পর্যাপ্ত পানি পান করুন: গবেষণায় দেখা গেছে, পানি বেশি খেলে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।


6. ফাইবার গ্রহণ বাড়ান: শাকসবজি, ছোলা, ওটস জাতীয় খাবার খেতে হবে।


7. ভিনেগার সেবন করুন: সাধারণ ভিনেগার বা অ্যাপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া উপকারী।


8. ক্রোমিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার খান: বাদাম, দানা শস্য, সবুজ শাক খেতে পারেন।


9. উপকারী মসলা খান: রসুন, দারুচিনি ও মেথি নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।


10. স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখুন: নিয়মিত ঘুম, মেডিটেশন ও মানসিক চাপ কমালে সুগার নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।


বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুগার স্পাইক প্রতিরোধ মানেই ভবিষ্যতের ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ এড়ানো। তাই এখন থেকেই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারায় সচেতন হোন।

নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজ পরিমাপ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখুন।সতর্ক হোন, সুস্থ থাকুন।

Mily

×