
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক সাধারণত হঠাৎ ঘটে যাওয়া বিপজ্জনক ঘটনা, যা মূলত হৃদয় বা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হয়। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (CVDs) বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণ, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ৩২ শতাংশের জন্য দায়ী। ২০১৯ সালে বিশ্বে প্রায় ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকজনিত কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।
তাই হৃদরোগ সম্পর্কিত লক্ষণ ও ঝুঁকির বিষয়গুলো আগে থেকেই জানা থাকলে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেসব লক্ষণকে ‘সতর্ক সংকেত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তা জেনে রাখা জরুরি।
হার্ট অ্যাটাকের ৭টি সতর্ক উপসর্গ
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত—
1. বুকের মাঝখানে চাপ বা জ্বালা-পোড়ার মতো ব্যথা
2. বাম হাত, পিঠ, চোয়াল বা কাঁধে ব্যথা বা অস্বস্তি
3. হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হওয়া
4. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
5. মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
6. ঠাণ্ডা ঘাম হওয়া
7. ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
নারীদের ক্ষেত্রে এসব উপসর্গ তুলনামূলকভাবে অস্পষ্ট হতে পারে—যেমন শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, চোয়াল বা পিঠে ব্যথা বেশি দেখা যায়।
স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণ
স্ট্রোক হঠাৎ ঘটে এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা জরুরি। লক্ষণগুলো হলো:
1. মুখ, হাত বা পায়ের দুর্বলতা (শরীরের এক পাশে বেশি)
2. হঠাৎ বিভ্রান্তি, কথা বলতে বা বুঝতে অসুবিধা
3. চোখে ঝাপসা দেখা বা অন্ধত্ব
4. চলাফেরায় ভারসাম্যহীনতা বা মাথা ঘোরা
5. অকারণে তীব্র মাথাব্যথা
6. হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে?
WHO-এর মতে, হৃদরোগের মূল ব্যবহারিক ঝুঁকিগুলো হলো:
1. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
2. শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
3. ধূমপান
4. অ্যালকোহলের অপব্যবহার
এর প্রভাব হিসেবে দেখা দিতে পারে:
1. উচ্চ রক্তচাপ
2. ডায়াবেটিস বা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়া
3. রক্তে চর্বি বেড়ে যাওয়া
4. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
এগুলোই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের বড় কারণ।
আপনার মধ্যে উপরের কোনো একটি উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বছরে অন্তত একবার পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এবং রক্তচাপ, ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
জীবন বাঁচাতে সচেতন হোন, সময়মতো চিকিৎসা নিন।
Mily