ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

সকালের প্রস্রাব দেখে জানুন শরীরে কি সমস্যা হচ্ছে!

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১২ জুলাই ২০২৫

সকালের প্রস্রাব দেখে জানুন শরীরে কি সমস্যা হচ্ছে!

ছবি: সংগৃহীত

প্রস্রাব সাধারণত স্বচ্ছ ও হালকা হলুদ থেকে গাঢ় হলুদ রঙের হয়ে থাকে। সকালের প্রথম প্রস্রাব সাধারণত গাঢ় রঙের হয়, কারণ রাতভর পানি না খাওয়ায় তা বেশি ঘন হয়ে যায়। অন্যদিকে, বেশি পানি খেলে প্রস্রাব হালকা হলুদ ও ফিকে হয়ে যায়।

তবে কিছু খাবার, খাদ্য রং ও ওষুধ প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন করতে পারে। যেমন—বিটরুট ও গাজর বেশি খেলে প্রস্রাবে এদের রঙ দেখা যেতে পারে। জাঙ্ক ফুডে থাকা কৃত্রিম রংও প্রস্রাবের রঙে প্রভাব ফেলে।

অনেক পরিচিত ওষুধও প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খেলে প্রস্রাব কমলা হয়ে যেতে পারে। রিফ্যাম্পিসিন (যক্ষা রোগের ওষুধ) ও ফেনাইটইন (মৃগী রোগে ব্যবহৃত) প্রস্রাবকে লালচে রঙ দিতে পারে।

কখনো কখনো প্রস্রাবে রক্ত দেখা যায়, ফলে প্রস্রাবের রঙ লাল হয়ে যায়। মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষায় লাল রক্তকণিকা (RBC) বা হিমোগ্লোবিন পাওয়া যায়। এর কারণ হতে পারে খুব সাধারণ মূত্রাশয়ের সংক্রমণ, আবার হতে পারে ভয়ানক কিছু, যেমন— মূত্রনালীর ক্যানসার। তাই এই অবস্থায় নেফ্রোলজিস্টের (কিডনি বিশেষজ্ঞ) পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

কখনো কখনো রক্তকণিকা ধ্বংস হয়ে প্রস্রাবে হিমোগ্লোবিন আসতে পারে— যাকে বলে হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া।
এটি জটিল অবস্থা এবং বিশদ রোগনির্ণয়ের প্রয়োজন হয়।

চরম মাত্রার ব্যায়াম, বিশেষ করে যারা অভ্যস্ত নন, তাদের ক্ষেত্রে মাংসপেশি ভেঙে যায়, এবং মায়োগ্লোবিন নামক প্রোটিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে— ফলে প্রস্রাব গোলাপি দেখায়।

প্রস্রাবে লিম্ফ মিশলে তা দুধের মতো সাদা দেখায়। আবার সবুজ রঙের প্রস্রাব দেখা যেতে পারে সুডোমোনাস (Pseudomonas) নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। কিছু সংক্রমণে প্রস্রাবের রঙ বেগুনিও হতে পারে।
অ্যামিট্রিপটিলিন নামক অ্যাণ্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধও প্রস্রাবকে সবুজাভ করতে পারে।

বিরল কিছু রোগে প্রস্রাবের রঙ রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করে। যেমন:

  • আলকাপটিউরিয়া (Alkaptonuria): কালো রঙের প্রস্রাব

  • মেলানোমা (Melanoma): কালচে প্রস্রাব

  • পর্ফাইরিয়া (Porphyria): লাল প্রস্রাব

তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা উচিত—শুধুমাত্র প্রস্রাবের রঙ দেখে রোগ নির্ণয় হয় না।
এটি কেবল চিকিৎসককে পরবর্তী পরীক্ষার দিকনির্দেশ দিতে সাহায্য করে। সাধারণ হলুদ রঙ থেকে ব্যতিক্রম হলে সেটি সবসময় গুরুতর কিছু বোঝায় না, তবে নির্ভরযোগ্য সিদ্ধান্ত নিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

আবির

×