
ছবি: সংগৃহীত
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও এখন উচ্চতর গ্রেড সুবিধা পাবেন বলে পূর্ণাঙ্গ রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই ১৮ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রায় দেন। রায় অনুযায়ী, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও নতুন পে স্কেল অনুযায়ী উচ্চতর গ্রেডের সুযোগ পাবেন। ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এই সুবিধার আওতায় আসবেন।
এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছিল, যেখানে বলা হয়—একই পদে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মচারী যদি একাধিক টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পান, তবে তিনি নতুন পে স্কেলে উচ্চতর গ্রেডের সুবিধা পাবেন না। তবে শুধুমাত্র একটি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেলে একজন কর্মকর্তা একটি উচ্চতর গ্রেড পেতে পারেন।
এই পরিপত্র জারির পর সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। অনেকেই এই নির্দেশনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বিষয়টি একাধিক মামলার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে গড়ায়।
সরকারি চাকরিজীবীদের আর্থিক সুরক্ষার অংশ হিসেবে সরকার নতুন পে স্কেল অনুযায়ী "স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড" ব্যবস্থা চালু করে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী যদি একই পদে ১০ বছর চাকরি করেন এবং পদোন্নতি না পান, তাহলে তিনি দুটি উচ্চতর গ্রেড স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাবেন।
তবে এই সুবিধার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় যে পরিপত্রটি জারি করেছিল, তাতে অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এটি মূল পে স্কেল কার্যকর হওয়ার তিন মাস পর, ২০২4 সালের সেপ্টেম্বরে জারি করা হয়।
সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পাওয়া কর্মচারীরাও পূর্বের মতো উচ্চতর গ্রেড পাবেন, যা তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে সহায়ক হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিভ্রান্তি ও আইনি অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে রায়টি সরকারি চাকরিজীবীদের মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
ছামিয়া