
আজ ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’
আজ ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’। আজকের এই দিনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের-বেরোবি প্রধান ফটকে পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল আবু সাঈদ। সে সময় সকল মানবতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবু সাঈদের বুকে গুলি করে হত্যা করে স্বৈরাচার হাসিনার পুলিশ বাহিনী। দিনটি উপলক্ষে আজ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে বাংলাদেশ। প্রথমে অন্তর্বর্তী সরকার ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ ঘোষণা করেছিল। পরে পরিবর্তন করে দিবসটির নামকরণ করা হয় ‘জুলাই শহীদ দিবস’।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদসচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই শোক ঘোষণা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার উদ্দেশে বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। এদিন শহীদদের মাগফিরাতের জন্য বাংলাদেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তাদের আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রধান ফটকের সামনে পুলিশের গুলিতে বুক ঝাঁজরা হয়ে যায় বেরোবির ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদের। দাবি আদায় করতে গিয়ে পুলিশের সামনে নিজের জীবন দিয়ে দেন তিনি। রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে আসা শহীদ আবু সাঈদ ছিলেন দঝঃঁফবহঃং অমধরহংঃ উরংপৎরসরহধঃরড়হ’ এর রংপুর কেন্দ্রীয় সংগঠক। ১৫ জুলাই তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি জীবন উৎসর্গের জন্য প্রস্তুত’ এবং পরদিন তার দৃঢ় আত্মত্যাগে আন্দোলন অম্লান হয়ে ওঠে রংপুরের বুকে।
সেদিন যা ঘটেছিল ॥ চব্বিশ সালের ১৬ জুলাই দুপুরে রংপুর জেলা স্কুলের সামনে একত্রিত হন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বেরোবির মূল ফটক পর্যন্ত তারা অগ্রসর হন। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। হাজারো শিক্ষার্থী সেদিন জনসমুদ্রের রূপ নেয়। ‘ভুয়া, ভুয়া’, ‘দাবি আদায়ের’ স্লোগানে মুখর ছিল চারদিক। মাইকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, ‘আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে এসেছি। আমাদের ওপর কেউ আঘাত করলে সেই হাত গুঁড়িয়ে দেব। কচুরিপানার মতো ভেসে আসিনি, দাবি আদায় করেই ফিরব ইনশাআল্লাহ।’
এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরাতে গেলে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। আনুমানিক আড়াইটায় গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সেদিনের আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে একজন আবু সাঈদের এক স্বজন বলেন, সকালে সাঈদ ভাই ফোনে ডেকে নেন। আমরা খামারমোড়ে সমাবেশে যোগ দিই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে গেলে দেখি ভেতরে ছাত্রলীগ, বাইরে পুলিশ। ছাত্রলীগ ইট ছোড়ে, পুলিশ গুলি চালায়। সাঈদ ভাইকে সরাতে গেলে দেখি তিনি গুলিবিদ্ধ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, আবু সাঈদ আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নই হবে প্রকৃত সম্মান।
প্যানেল হু