ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

শিশুদের মধ্যে বাড়ছে কিডনির রোগ, অভিভাবকদের যা অবশ্যই জানতে হবে

প্রকাশিত: ১৮:১৭, ১৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৮:১৮, ১৫ জুলাই ২০২৫

শিশুদের মধ্যে বাড়ছে কিডনির রোগ, অভিভাবকদের যা অবশ্যই জানতে হবে

ছবি:সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের মধ্যে কিডনির রোগ (kidney diseases) বেড়ে চলেছে, যা এক নীরব বিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যা শুধু বড়দের নয়, এখন শিশুদের মধ্যেও মারাত্মক আকার ধারণ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রেনাল ডেটা সিস্টেম (USRDS)-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দশকে শিশুদের মধ্যে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD)-এর ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিশুদের কিডনির রোগের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: আধুনিক জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে শিশুদের খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার (processed food) যুক্ত হয়েছে, যা কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

শ্রমবিমুখতা এবং স্ক্রিন টাইম: শারীরিক কার্যকলাপ কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের কারণে শিশুদের মধ্যে স্থূলতা (obesity) বাড়ছে, যা উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আর এই রোগগুলো কিডনির সমস্যা সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ।

পরিবেশ দূষণ: বায়ু, মাটি এবং জলের দূষণও শিশুদের কিডনির রোগের জন্য দায়ী।

জলশূন্যতা: সারা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং পর্যাপ্ত জল পান না করার কারণে দীর্ঘমেয়াদি জলশূন্যতাও কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে।

অভিভাবকদের জন্য সতর্কবার্তা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের কিডনির রোগ প্রাথমিকভাবে নীরব থাকে এবং ধীরে ধীরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই অভিভাবকদের জন্য কিছু বিষয় জানা অত্যন্ত জরুরি:

প্রারম্ভিক লক্ষণ: শিশুর মধ্যে প্রস্রাব সংক্রান্ত সমস্যা যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালা বা প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা—এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শারীরিক লক্ষণ: চোখ ফোলা, গোড়ালিতে ফোলাভাব, প্রস্রাবে অতিরিক্ত ফেনা, শারীরিক বৃদ্ধি কম হওয়া, উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকা—এই লক্ষণগুলো কিডনি রোগের ইঙ্গিত হতে পারে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: শিশুদের জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত চিনি ও লবণযুক্ত খাবার এবং প্যাকেটজাত পানীয় থেকে দূরে রাখুন। তাজা, স্থানীয় এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে উৎসাহিত করুন।

পর্যাপ্ত জল পান: বিশেষত গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় শিশুদের পর্যাপ্ত জল পান করানো জরুরি।

ব্যায়াম ও খেলাধুলা: শিশুদের নিয়মিত ব্যায়াম এবং খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম কমিয়ে তাদের সক্রিয় জীবনযাপনে উৎসাহিত করুন।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: ৩ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করানো উচিত।

ওষুধ ব্যবহারে সতর্কতা: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুদের কোনো ওষুধ দেবেন না, কারণ কিছু ওষুধ কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

শিশুদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সচেতনতা এবং সময় মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।

 
 

মারিয়া

×