
ছবি: জনকণ্ঠ
সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ও বৃদ্ধ পিতাকে হত্যা করে ৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে লুট হওয়া সোনার গয়না ও নগদ টাকা।
মঙ্গলবার বগুড়া জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন একই উপজেলার আব্দুল হাকিম (৩৪), আব্দুল মান্নান (৫০), রফিকুল ইসলাম (৪১)। এদের মধ্যে হাকিম ডাকাত দলের সরদার। তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। আর এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল নিহত আফতাব উদ্দিনের পুরোনো কর্মচারী আব্দুল মান্নান। একসময় তিনি আফতাবের সেচপাম্পে কাজ করতেন, তবে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ায় তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই হত্যা ও ডাকাতির ছক আঁটে মান্নান।
৮ জুলাই গভীর রাতে দুপচাঁচিয়ার লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামের ওই বাড়িতে ঢুকে পড়ে ডাকাত দল। প্রথমে তারা বাড়ির কর্তা আফতাব উদ্দিন (৬৫)-কে ঘর থেকে ডেকে বের করে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর পাশের ঘরে গিয়ে পুত্রবধূ রিভা খাতুন (২৭)-কেও একই কায়দায় হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
হৃদয়বিদারক এই ঘটনার সময় ঘরে উপস্থিত ছিল পুত্রবধু রিভার ৫ বছর বয়সী মেয়ে রুকাইয়া তাসনিম মালিহা। অলৌকিকভাবে সে প্রাণে বেঁচে যায়, তবে ডাকাতরা তাকে চোখ বন্ধ করে রাখার হুমকি দেয়। ডাকাত দল এরপর ঘর তছনছ করে ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ঘড়ি লুট করে পালিয়ে যায়।
প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে হাকিম ও মান্নানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কুড়িগ্রামের চর জামাল গ্রামে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় রফিকুল ইসলামকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে: লুটে নিয়ে যাওয়া স্বর্ণের দুল, চুড়ি ও আংটি, দুটি মোবাইল ফোন, একটি ঘড়ি, নগদ ৭,৫০০ টাকা। গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান।
অভিজ্ঞজনরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এমন তৎপরতা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে পরিচিতজনের প্রতিশোধপরায়ণতাই অনেক সময় সবচেয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাগুলোতেও স্থায়ীভাবে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা জরুরি।
শহীদ