
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে হুমকি দিয়েছেন পৌর বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন ফরাজী। রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির উদ্যোগে হত্যা, নৈরাজ্য, মব সৃষ্টি ও খুলনার যুবদল নেতা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথসভা থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, রবিবার বিকেল ৫ টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলায় বিএনপির পৌর শাখার উদ্যোগে হত্যা, নৈরাজ্য, মব সৃষ্টি ও খুলনার যুবদল নেতা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারের দাবিতে পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথসভায় মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি জসিম উদ্দিন ফরাজী তার বক্তব্যে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে হুমকি দেন। জসিম উদ্দিন ফরাজী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ওই পথসভাই তার প্রথম কর্মসূচি।
জসিম উদ্দিন ফরাজী তার বক্তব্যে বলেন, "বর্তমানে যে ওসি সাহেব আছেন উনি নাকি একটা দলের আমিরে রূপান্তরিত হয়েছেন। ওনাকে বলতে চাই- উনি যদি আমির হয়ে থাকেন তাহলে আমির হিসেবে থাকবেন, মঠবাড়িয়ার ওসি হিসেবে থাকবেন না। আপনাকে বলতে চাই- আজকে আপনার জন্য এই মঠবাড়িয়া কলুষিত হচ্ছে, আপনি অনতিবিলম্বে এই মঠবাড়িয়া ত্যাগ করে আরেকজনকে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে যে মঠবাড়িয়া পরিচালনা করতে পারবে তাকে আসতে দিন। আপনাকে বলতে চাই- আপনি যে এই মঠবাড়িয়ায় একটা অন্য দলের অফিস খুলেছেন সেটা আজ থেকে বন্ধ করুন।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) বলেন, "আওয়ামী লীগের কেউ গ্রেপ্তার হলে মঠবাড়িয়া বিএনপির চার গ্রুপ ছেড়ে দিতে সুপারিশ করে। ওসি সাহেব তাদের এই সুপারিশ আমলে নেননি। যার কারণে বিএনপির চারটি গ্রুপ এক হয়ে তাকে ট্যাগ দিয়ে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।"
তিনি আরও বলেন, "গত ১০ জুলাই মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ওপেন হাউস ডের আয়োজন করে থানা পুলিশ। সেখানে বক্তব্যে আয়োজন উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা সাবেক পৌর আহ্বায়ক কেএম হুমায়ুন কবীর ওসিকে জামায়াত ট্যাগ দেন। তখন অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।"
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন ফরাজী বলেন, "মঠবাড়িয়া থানাকে একটা বিশেষ দলের কার্যালয় হিসেবে পরিণত করা হচ্ছে, প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে ওই দল থেকে যে ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয় ওই ধরনের কাজই মঠবাড়িয়া থানা প্রতিফলিত করে। আমরা দীর্ঘদিন মঠবাড়িয়ায় রাজনীতি করেছি, আন্দোলন সংগ্রামে ছিলাম, সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি, এখন দেখছি একটা বিশেষ দল বিভিন্ন ভালো মানুষদেরও মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এ ব্যাপারে আমি জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছি। তিনি আমার কথা শুনেছেন এবং ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।"
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ আবু নাসের বলেন, "গতকালকের বিষয়টি আমি জানি না। তবে এর আগে আমাদের ওপেন হাউস ডের প্রোগ্রামে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। আমি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (মঠবাড়িয়া সার্কেল) বলেছি এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।"
Mily