ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিলামে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিলামে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাজার স্থিতিশীল রাখতে দেশে প্রথমবারের মতো নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ায় ১৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কারণে দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। বিপরীতে চাহিদা কমেছে ডলারের। ফলে ডলারের দাম হঠাৎ কিছুটা কমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৮ ব্যাংক থেকে নিলামে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনেছে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাজারে ডলারের চাহিদা কমে যাওয়ায় দর কমতে শুরু করে। এজন্য রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের আয়ের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার ক্রয় করেছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত কাজের অংশ। ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা মাঝেমধ্যে ডলার ক্রয় ও বিক্রি করে থাকি। তবে দীর্ঘদিন ডলার ক্রয়ের প্রয়োজন হয়নি। ডলারের চাহিদা কমে যাওয়ায় নিলামে ডলার ক্রয় করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো গত রবিবার ডলার ১২০ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ২০ পয়সায় কেনা-বেচা করেছে। অথচ মাসের শুরুতে, ২ জুলাই, এই দর ছিল ১২২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৮৫ পয়সা পর্যন্ত। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে ডলারের দর কমতে থাকে। রবিবার ডলারের দাম ১২০ টাকায় নেমে আসে। এমন পরিস্থিতে নিলামে ডলার ক্রয় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিলামে ডলার বিক্রি করার জন্য অধিকাংশ ব্যাংক ১২০ টাকার আশপাশে দর প্রস্তাব করে। সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংক কাট অফ প্রাইস ১২১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে। এই কাট অফ প্রাইসে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার আন্তঃব্যাংকিং ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকা ১০ পয়সা, যা গত ৯ জুলাই ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা। তবে ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিটেন্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। তাছাড়া জুন মাসে আইএমএফ, এডিবি, জাইকা এবং এআইআইবি থেকে অর্থ সহায়তা পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে, ডলার বেড়েছে। এসব কারণে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে এবং ডলারের ওপর চাপ হালকা হওয়ায় দাম কমছে। ফলে দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিটেন্স আয় বৈধপথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন তারা।

adbilive
adbilive
৩৭ বছরেও  কাটেনি ৮৮ সালের বন্যার দুর্ভোগ

৩৭ বছরেও কাটেনি ৮৮ সালের বন্যার দুর্ভোগ

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় বন্যায় চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের  চলাচলের প্রধান রাস্তা ভেঙে গেলেও ৩৭ বছরে আর লাগেনি জোড়া, হয়নি কোনো ব্রিজ। তাই চলাচলের অযোগ্য এ রাস্তায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্থানীয়রা। জানা যায়, চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র জনগুরুত্বপূর্ণ বহু বছরের পুরানো ঝালুপাড়া ব্রিজ হতে কাঠের ব্রিজ হয়ে গিয়াসের মোড়, ব্রাহ্মণজানি রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন সরিষাবাড়ী ও কাজীপুর উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে থাকে। গত ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় এ রাস্তাটি ভেঙে গিয়ে তৈরি হয় বিশাল আকৃতির দুটি জলাশয় (প্রাকৃতিক সৃষ্টি পুকুর)। তখন থেকেই মানুষ সেই জলাশয়ের পাড় দিয়ে যাতায়াত করলেও দীর্ঘ  ৩৭ বছরেও সেখানে কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। সংস্কার বা নির্মাণ করা হয়নি কোনো পাকা রাস্তা। অথচ মাজনাবাড়ী, সালালচর, কুমারিয়াবাড়ী, শালগ্রাম, ছিন্না, ভোলারদিয়ার, শালদহ, চরসরিষাবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের  জনগণের সরিষাবাড়ী উপজেলা সদরে যোগাযোগের সবচেয়ে পুরাতন ও প্রধান রাস্তা এটি। সম্প্রতি কাঠের ব্রিজে হয়েছে বড় একটি সেতু, হয়েছে ঝালুপাড়া হতে এ ব্রিজ পর্যন্ত পাকা রাস্তা। কিন্তু অবহেলিতই রয়ে গেছে কাঠের ব্রিজ হতে গিয়াসের মোড় পর্যন্ত এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। এ বিষয়ে পথচারী চরসরিষাবাড়ী গ্রামের সোবাহান মেকার বলেন, এটি আমাদের চরের মানুষের সরিষাবাড়ী উপজেলা সদরে যোগাযোগের প্রধান রাস্তা। গত ১৯৮৮ সালের বন্যায় এ রাস্তাটির দুই জায়গায় ভেঙে বড় দুটি জলাশয় সৃষ্টি হয়েছে। তখন থেকেই আমরা জলাশয়ের পাড় দিয়ে চলাচল করি। আমাদের রাস্তাটির খুব খারাপ অবস্থা, যাওন যায় না। আমি সাইকেল থেকে নেমে হেঁটে ব্রিজ পর্যন্ত যেতে হবে। সরিষাবাড়ী থেকে ব্রাহ্মণজানি বাজারসহ এর মাঝে যেগুলো গ্রাম আছে সেই গ্রামগুলোতে যাতায়াত করতে হলে অনেক দূর হয়ে ঘুরে বিকল্প রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। অনেক সময় নষ্ট হয়। এ রাস্তাটি পাকা হলে আমাদের আর কষ্ট হবে না। স্থানীয় সচেতন এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি একজন গর্ভবতী মা যিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা কোনো গাড়ি চলাচল না করায় অনেক কষ্ট করে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কয়েকবার পা পিছলে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এটি দেখে আমি বাবাকে বলে আমার বাড়ির সামনের রাস্তাটুকু মাটি কেটে দেই। এই রাস্তাটি পাকা হওয়া খুবই প্রয়োজন। আমরা কর্তৃপক্ষকে দ্র‍ুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাই। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।

পিএসজিকে গুঁড়িয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন চেলসি

পিএসজিকে গুঁড়িয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন চেলসি

ফুটবল বিশ্বে একটা কথা বেশ ভালোভাবেই প্রচলিত আছে। যে কোনোভাবে ফাইনালে উঠে এলে আর চেলসিকে আটকানো সম্ভব না! যেভাবেই হোক তারা শিরোপা জয় করবে। নতুন আঙ্গিকে হওয়া ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এ কথা আরেকবার প্রমাণ করেছে ইংলিশ পরাশক্তি চেলসি। রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ফাইনালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ও ফরাসি পরাশক্তি প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনকে (পিএসজি) ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে বøুজরা। জোড়া গোল করে ফাইনালের নায়ক বনে  গেছেন চেলসির ইংলিশ মিডফিল্ডার কোল পালমার। বিজয়ী দলের হয়ে অপর গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জোয়াও পেদ্রো। ম্যাচের তিনটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। ম্যাচ শেষে বিজয়ী চেলসির খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ৮১ হাজার ১১৮ সমর্থকের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের উপস্থিতি বাড়তি আকর্ষণের জন্ম দেয়। অথচ সুস্পষ্ট ফেভারিট হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে এসেছিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। দাপটের সঙ্গে বড় দলগুলোকে বিদায় করে ফাইনালের টিকিটও পেয়েছিল প্যারিসের পরাশক্তিরা। বিশেষ করে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনাল ম্যাচের আগে পিএসজি ছিল হট ফেভারিট। কিন্তু সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়ে চেলসির কাছে তাদের অবিশ্বাস্য পতন হয়েছে। তাদের ব্যর্থতার ষোলোকলা পূরণ হয়েছে ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে। এ সময় মার্ক কুকুরেলাকে ধাক্কা দিয়ে লালকার্ড  দেখেন পিএসজির পর্তুগিজ মিডফিল্ডার  জোওয়া নেভেস। মৌসুমটা স্মরণীয় করে রাখতে এর থেকে বড় কিছু আর হতে পারে না চেলসির জন্য। উয়েফা কনফারেন্স লিগ জয়ের পর প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত বর্ধিত কলেবরের ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও তারা শোকেসে ভরেছে। টেবিলের চতুর্থ স্থানে থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ করায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতায় প্রাইজমানি হিসাবে ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পকেটে পুরেছে চেলসি। অন্যদিকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বড় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে পরাজিত করে রেকর্ড গড়ে প্যারিসের পরাশক্তিরা। এবার সেই দলটি চেলসির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। ফাইনালে ম্যাচের ২২ মিনিটের সময় পালমারের কোনাকুনি শটে এগিয়ে যায় চেলসি। পিএসজির লেফট ব্যাক মেনডেসে তার পজিশন থেকে বাইরে চলে এলে পালমার বক্সের ভেতর সুবিধাজনক অবস্থান খুঁজে পায়। এই সুযোগে একইদিক দিয়ে ৩০ মিনিটে তিনি ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বিরতির দুই মিনিট আগে ব্রাজিলিয়ান পেদ্রো  চেলসির হয়ে তৃতীয় গোল করেন। এর আগে ফ্লমিনেন্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও জোড়া গোল করেছিলেন পেদ্রো। ম্যাচে জয়ের নায়ক পালমারের প্রশংসা করে চেলসি কোচ এঞ্জো মারেসকা বলেন, ক্লাব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমাদের জন্য সত্যিই গর্বের। আমরা খুব খুশি। বিশেষ করে পিএসজির মতো বিশ্বসেরা একটি দলের বিপক্ষে এই জয়টা সত্যিই বিশেষ অর্জন। আমি মনে করি পিএসজির কোচ লুইস এনরিকে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ। এ ধরনের ম্যাচে আমরা কোলের কাছ থেকে সবসময়ই কিছু প্রত্যাশা করি। কারণ এটি একটি বড় ম্যাচ, বড় মুহূর্ত। এসব ম্যাচেই নিজেকে প্রমাণের একটি সুযোগ আসে। গত মে মাসে উয়েফা কনফারেন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল বেটিসকে ৪-১ গোলে হারায় চেলসি। দুটি গোলে অ্যাসিস্ট করে ওই ম্যাচেও সেরার পুরস্কার জিতে নেন পালমার। বড় মঞ্চে আরও একবার নিজেকে মেলে ধরতে পেরে আনন্দের যেন শেষ নেই তার। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয় করা এই ইংলিশ মিডফিল্ডার বলেন, আমি ফাইনাল ম্যাচ পছন্দ করি। আরও একবার ফাইনালে ভালো করতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, এই জয়ের অনুভ‚তি চমৎকার। বেশি ভালো লাগছে কারণ ম্যাচের আগে কেউ আমাদের সম্ভাবনা দেখেনি, আমরা সেটা জানি। আমরা যেভাবে লড়াই করেছি, দারুণ ছিল।

শুধু পানি আনতে গিয়েই প্রাণ গেল ৭০০ ফিলিস্তিনির

শুধু পানি আনতে গিয়েই প্রাণ গেল ৭০০ ফিলিস্তিনির

প্রায় দুই বছরের ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজা যেন মৃত্যুপুরী। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে প্রাণহানি ঘটেছে ৫৮ হাজারেরও বেশি। এদের মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশু। বাদ যায়নি সাংবাদিক, চিকিৎসক, ত্রাণ বিতরণকারী স্বেচ্ছাসেবী ও মানবাধিকার কর্মীরাও। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সময়ে গাজার উত্তরে ইসরাইলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছে উভয় পক্ষ। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে ২১ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। সম্প্রতি কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে এক সপ্তাহব্যাপী পরোক্ষ যুদ্ধবিরতির আলোচনা কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হওয়ার পর এই সহিংসতা শুরু হয়েছে। রবিবারও উপত্যকার একটি ব্যস্ত বাজার এবং একটি পানি বিতরণ কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে কমপক্ষে ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে। আর এর মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরাইলি বর্বরতায় মৃতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রবিবার গাজা সিটির বাজারে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বিশিষ্ট চিকিৎসক আহমেদ কান্দিলও রয়েছেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি পানি সংগ্রহস্থলে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হন। চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে সাত শিশুও ছিল যারা খাবার পানি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল। ওই হামলায় আরও কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন। গাজা সিটির বাজারে হামলার বিষয়ে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তাদের দাবি, নুসেইরাতে আক্রমণটি একজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে করা হয়েছিল এবং কারিগরি ত্রæটির কারণে এটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ইসরাইলের এমন দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। শুধু পানি আনতে গিয়েই ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত \ গাজায় পানি নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের হামলায় শিশুসহ ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির মিডিয়া অফিস। তারা বলছে, ‘পরিকল্পিত তৃষ্ণা যুদ্ধের’ অংশ হিসেবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এসব হামলা চালিয়েছে। খবর আলজাজিরার। এক বিবৃতিতে  মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ১১২টি মিষ্টি জলের ভরাট কেন্দ্র এবং ৭২০টি জলক‚প ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এর ফলে ১২.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তবে কতদিনে এই সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে সে তথ্য জানায়নি সংবাদমাধ্যমটি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য জোরদার চায় বাংলাদেশ

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য জোরদার চায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক। সোমবার ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংগঠনটি। এ সময় উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা করে। সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএর পক্ষে সহসভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক ফয়সাল সামাদ এবং সদস্য ইসরাফিল আতিক উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে দক্ষিণ কোরিয়া রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কোরিয়ান দূতাবাসের কনসাল কিম জিয়ং কি এবং হাইসাং টিএনসি করপোরেশন (বাংলাদেশ লিয়াজোঁ অফিস)-এর কান্ট্রি হেড নোহ চি উও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে তারা বিভিন্ন প্রতিশ্র‍ুতিশীল ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা নিবিড় করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিশেষ করে দুই দেশের পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পে একটি অর্থপূর্ণ উপায়ে একসঙ্গে কাজ করার মতো সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা করেন। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যান-মেইড ফাইবার, টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল ডাইস এবং অন্যান্য কাঁচামাল রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ একটি প্রতিশ্রæতিশীল গন্তব্য। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় পোশাক রপ্তানি বাজার। সুতরাং বাণিজ্যে উভয় পক্ষের জন্য পারস্পরিক সুবিধা রয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়ার অবদান, বিশেষ করে এই খাতের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তার ক্ষেত্রে কোরিয়া যে সহায়তা দিয়েছিল, কৃতজ্ঞচিত্তে তার উল্লেখ করে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়াতে এবং বাংলাদেশে নন-টেক্সটাইল ক্ষেত্রগুলোতে কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন। বিজিএমইএ নেতারা দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বানিজ্য স¤প্রসারণে বাজার সংক্রান্ত জ্ঞান বিনিময় এবং দেশ দুটির ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরও নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করার বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা চান। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনে ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা) আইন, ২০১৯-কে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর সাথে আরও বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং বাংলাদেশের শ্রমিকদের আরও উৎপাদনীলতা বৃদ্ধি ও চট্রগ্রাম বন্দরকে আরও দক্ষ করে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। উভয় পক্ষ মত প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে এফটিএ চুক্তি (মুক্ত বানিজ্য চুক্তি) ও ইপিএ (অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি) স্বাক্ষরিত হলে উভয় দেশই লাভবান হবে।  বিজিএমইএ সভাপতি দক্ষিন কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে দেশটির সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত থাকবে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।