
ছবি: সংগৃহীত
দেশে ডলারের দাম এক সপ্তাহে এক টাকা পর্যন্ত কমেছে। অথচ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারভিত্তিক করার সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার দেড় মাস পরও দাম না বাড়ে বরং কমছে। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক ও বাজার সংশ্লিষ্ট কারণ।
১. রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ে বড় উল্লম্ফন
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড ৩০.৩২ বিলিয়ন ডলার এসেছে। শুধু তাই নয়, দুই ঈদে দেশে আসা রেমিটেন্স ছিল চাঙ্গা। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের পরিমাণও বেড়েছে। এ দুটি উৎস থেকেই বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে।
২. মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমে যাওয়া
ব্যবসায়িক অনিশ্চয়তা, উচ্চ সুদের হার ও বিনিয়োগে ভাটা থাকায় নতুন মেশিনারি ও যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। ফলে আমদানির খাতে ডলারের চাহিদা কমেছে।
৩. বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ বেড়েছে
জুন মাসেই আইএমএফ, এডিবি, জাইকা এবং এআইআইবি থেকে মিলেছে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সরবরাহ দুটোই বেড়েছে।
৪. বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কম
সরকার পরিবর্তনের পর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি টানা ৭ মাস ধরে ৮ শতাংশের নিচে। মে মাসে তা দাঁড়ায় মাত্র ৭.১৭ শতাংশে। অর্থাৎ ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহ কমে যাওয়ায় ডলার ব্যবহারে চাপও কমেছে।
৫. বিনিয়োগ কম, কারখানা বন্ধের ধাক্কা
বেক্সিমকো, এস আলমসহ বেশ কিছু বড় শিল্প গ্রুপের কারখানা অচল হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান আর ডলার ব্যয়ে নতুন যন্ত্রপাতি আনছে না। অর্থাৎ নতুন বিনিয়োগ না হওয়ায় ডলারের চাহিদাও ততটা বাড়ছে না।
ডলারের দাম কমে ভালো ও খারাপ দিক কী?
ভালো দিক:
- আমদানি ব্যয় কমবে
- মূল্যস্ফীতিও কিছুটা হ্রাস পাবে
খারাপ দিক:
- রপ্তানিকারকরা কম দর পাবেন
- প্রবাসীদের ইনসেনটিভ কমে যাওয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহে প্রভাব পড়তে পারে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থিতিশীল ডলার বাজার অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হলেও অতিরিক্ত দরপতন দীর্ঘমেয়াদে আয়ের উৎসগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
আঁখি